পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: অ্যাডিনোভাইরাস (Adenovirus) ক্রমশই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রাজ্যে। কলকাতার পাশাপাশি সংক্রমণ-উদ্বেগের ছবি দেখা যাচ্ছে জেলাতেও। একদিনে জ্বরে আক্রান্ত ২৭ জন শিশু ভর্তি হয়েছে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। একসঙ্গে এত শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ায় চাপ বাড়ছে মেডিক্যালের উপরেও। একসঙ্গে এত শিশু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমণের আবহে বেড়েছে উদ্বেগও। 


বাড়ছে জ্বর:
মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (Bankura Medical College and Hospital) রয়েছে ৫৪ জন শিশু। সব শিশুই জ্বরে আক্রান্ত। তারই সঙ্গে রয়েছে সর্দি ও কাশি। বেশ কিছু শিশু শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাতেও ভুগছে। এরমধ্যে হাসপাতালের পিকু ওয়ার্ডে রয়েছে ১০ শিশু। উদ্বেগ বাড়লেও সামগ্রিক পরিস্থিতি এখনও পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে। শিশু ওয়ার্ডের বহির্বিভাগেও জ্বর ও সর্দি-কাশির উপসর্গ নিয়ে ভিড় জমছে রোগীদের। এমন ঘটনায় চাপ ক্রমশ বাড়ছে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে, বাড়ছে উদ্বেগও। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, পর্যাপ্ত পরিকাঠামো রয়েছে। শিশু বিভাগের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক রয়েছে। শিশুদের জ্বর ও কোনওরকম উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলছেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সমস্যা হলে দ্রুত বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে শিশুদের নিয়ে আসার কথা বলেছেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার।


রাজ্যে অ্য়াডিনো ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা। প্রায় প্রতিদিনই জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনে আসছে। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।


স্বাস্থ্য দফতরের বার্তা:
এর মাঝেই পরিস্থিতি পর্যালোচনায় কয়েকদিন আগেই স্বাস্থ্য ভবনে জরুরি বৈঠক হয়। জারি হয়েছে একটি গাইডলাইন। শিশুদের চিকিৎসা পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে, স্বাস্থ্য ভবনে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে সমস্ত জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে। সমস্ত হাসপাতালকে শিশুদের জন্য ভেন্টিলেটর (Ventilator) এবং অক্সিজেনের (Oxygen Support) পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, শ্বাসকষ্টের চিকিৎসার জন্য বাড়তি পেডিয়াট্রিক বেডের (Pediatric Bed) বন্দোবস্ত রাখতে হবে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে এলে ফেরানো যাবে না কোনও রোগীকে। অপ্রয়োজনে কাউকে কলকাতার হাসপাতালে রেফারও করা যাবে না। যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে রাশ টানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


এদিকে, অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে তৈরি হওয়া আতঙ্ক-উদ্বেগের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানিয়েছেন, প্রতি বছর শীতের শেষে অথবা বসন্তের শুরুতে শ্বাসকষ্টজনিত এই সমস্যা দেখা যায়। এই বছর রোগের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য রাজ্য তৈরি। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বেশ কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্সি জেলে আহত পার্থ, মুখে চোট লেগেছে নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর