ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: হালতুতে শিশুকে খুন করে দম্পতি আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় মামা-মামির পর এবার গ্রেফতার করা হল এক লোন এজেন্টকে। ঋণের টাকা ফেরত পেতে লাগাতার চাপ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। দেওয়ালে দম্পতির লিখে যাওয়া নামের সূত্রে গ্রেফতার করে হয়েছে অভিযুক্তকে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ধৃতের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে মামলা। 


একমাত্র ছেলের অপারেশনের জন্য মাথার ওপর মোটা টাকা ঋণ। লাগাতার চাপ দেওয়ার পাশাপাশি অপমানের অভিযোগ লোন এজেন্টের বিরুদ্ধে। ঋণ শোধ করার জন্য জমি বিক্রি করতে চাইলেও মামা-মামির আপত্তি। হালতুর ঘটনায় তদন্তে নেমে তদন্তকারীদের অনুমান, এমন চাপে পড়ে সম্ভবত চরম সিদ্ধান্ত নেন দম্পতি। সেই ঘটনায় এবার গ্রেফতার করা হল চঞ্চল মুখোপাধ্যায় নামে এক লোন এজেন্টকে। পুলিশ সূত্রে খবর, দেওয়ালে লেখা সুইসাইড নোটে ধৃতের নাম ছিল। কিন্তু সপরিবারের কেন এই চরম সিদ্ধান্ত? একমাত্র সন্তানকে খুন করে কেন আত্মঘাতী হলেন দম্পতি?

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ছেলের অস্ত্রোপচারের জন্য, অটো চালক সোমনাথ রায়ের বড় অঙ্কের টাকার দরকার ছিল। সেই কারণে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে তাঁকে ১০ লক্ষ টাকা ঋণ পাইয়ে দেন চঞ্চল। কিন্তু সেই ঋণ শোধ করতে পারছিলেন না সোমনাথ। এরপর টাকার জন্য তাগাদা দিতে শুরু করেন চঞ্চল। বাড়ি এসে কয়েকজন সোমনাথকে হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানতে পেরেছেন, ঋণ শোধ করার জন্য, একটি জমি বিক্রি করার চেষ্টাও করেন সোমনাথ। কিন্তু তিনি তা পারেননি। কারণ, মামা-মানি এমনভাবে নথি তৈরি করে রেখেছিলেন, যে ৬ কাঠা ওই জমি বিক্রি করতে গেলে নিতে হবে তাঁদের অনুমতি। ঋণ শোধের জন্য ওই জমি বিক্রির কথা বললে মামা-মামি সায় দেননি বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

এই ঘটনার জেরেই সপরিবারের চরম সিদ্ধান্ত নেন সোমনাথ। মঙ্গলবার সকালে মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হন এলাকার বাসিন্দারা। একই ঘরে সিলিং থেকে ঝুলছিল সোমনাথ রায় ও সুমিত্রা রায়ের দেহ। বাবার বুকে কাপড়ে বাঁধা আড়াই বছরের শিশুর মৃতদেহ। পুলিশ সূত্রে খবর, একটি দেওয়ালে লেখা ছিল মামা-মামির নাম, অন্য দেওয়ালে লেখা ছিল লোন এজেন্ট চঞ্চল মুখোপাধ্যায়ের নাম। বুধবার রাতে ওই লোন এজেন্টকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ধৃতের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে মামলা।

আরও পড়ুন: SFI On Student Union Election: ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে এবার চালিয়ে খেলা হবে, হুঙ্কার দিল SFI