ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: হরিদেবপুরে তরুণী ডালিয়া চক্রবর্তীকে খুনের ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম অর্জুন দাস। গতকাল গ্রেফতার হন মূল অভিযুক্ত অরুণাভ পাত্র। ধৃতদের বিরুদ্ধে ৩০২, খুন, ২০১ তথ্যপ্রমাণ লোপাট-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের টানাপোড়েনে খুন হন তরুণী, দাবি পুলিশের। 


পুলিশ সূত্রে খবর, মাসছয়েক ধরে হরিদেবপুরে ভাড়া থাকতেন অরুণাভ। তাঁর সঙ্গে ডালিয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অরুণাভর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। তাঁর অনুপস্থিতিতে সোমবার অরুণাভর ভাড়াবাড়িতে 
যান ডালিয়া। পুলিশের দাবি, সেখানে টাকা পয়সা নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে বচসা শুরু হয় তরুণীর। তার জেরে প্রেমিকার ওড়না পেঁচিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন অরুণাভ। এরপর দেহ সরিয়ে ফেলতে বন্ধু অর্জুনকে ফোন করে ডাকেন। দু’জনে মিলে দেহ ফেলে আসেন অরুণাভর বাড়ি থেকে ২০-২৫ মিটার দূরে। এরপর অরুণাভ সোনারপুরে ও অর্জুন দত্তপুকুরে গা ঢাকা দেন। কিন্তু ডালিয়ার শেয়ার করা লাইভ লোকেশনই ধরিয়ে দেয় অরুণাভকে।


সোমবার, নরেন্দ্রপুর থেকে নিখোঁজ। মঙ্গলবার, দেহ উদ্ধার হয় ১০ কিলোমিটার দূরে হরিদেবপুরে। এই ঘটনায় তরুণীর সঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সম্পর্কের টানাপোড়েনে খুন বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান তদন্তকারীদের।


জন্মদিনের সকালে, হরিদেবপুরের রাস্তা থেকে উদ্ধার হয়, বছর চব্বিশের ডালিয়া চক্রবর্তীর মৃতদেহ। তাঁর বাড়ি নরেন্দ্রপুরের নয়াবাদে। পরিবারের দাবি, সোমবার বিকেলে তরুণী বাড়ি থেকে বের হন। হরিদেবপুরের এক ব্যক্তিকে ধার দেওয়া ৪ হাজার টাকা ফেরত আনতে যাচ্ছেন বলে জানান। সন্ধে ৭টা নাগাদ শেষবার স্বামীর সঙ্গে কথা হয় তরুণীর। সেইসময় মোবাইল ফোন থেকে নিজের লাইভ লোকেশন শেয়ার করেন ডালিয়া। 


আরও পড়ুন, আজও ম্যারাথন জেরা? কী কী প্রশ্নবাণে অনুব্রতকে জর্জরিত করবে ইডি?


স্বামীর দাবি, রাত ১০টা নাগাদ স্ত্রীকে ফোন করলেও, রিং হওয়ার পরই কেটে দেওয়া হয়। তারপর, আর যোগাযোগ করা যায়নি। দোলের দিন সকালে হরিদেবপুরে রাস্তার পাশে তরুণীর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরনে ছিল সালোয়ার কামিজ। পুলিশের মাধ্যমে তরুণীর দেহ উদ্ধারের কথা জানতে পারে পরিবার। পুলিশ সূত্রে দাবি, তরুণীর গলায় ফাঁস ও নখের আঁচড়ের দাগ মিলেছে। এরপরই, তদন্তে নেমে, নরেন্দ্রপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় তরুণীর সঙ্গী অনিরুদ্ধ পাত্রকে।


পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক স্বীকার করেছেন, সোমবার সন্ধেয় তাঁর বাড়িতে আসেন ডালিয়া। তিনি মদ্যপান করেছিলেন। রাতের দিকে টাকা-পয়সা নিয়ে তরুণীর সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। এরপরই সে শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করেন। এরপর দেহ ফেলে আসেন হরিদেবপুর এলাকায়। তারপরই, নিহত তরুণীর সঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


শুধুই কি সম্পর্কের টানাপোড়েন? নাকি, এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।