কলকাতা: হরিদেবপুরে অয়ন (Haridevpur Murder Update) মণ্ডলকে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর দাবি বন্ধুর। ওই যুবকের কথামতো খুনের ঘটনা ঘটেছে রাত ৩টের পর। বন্ধু রাজু প্রামাণিকের দাবি, ওইদিন অয়নের বান্ধবীর বাড়ির বাইরে তিনি অপেক্ষা করছিলেন। একাধিকবার মোবাইল ফোনে দুই বন্ধুর কথা হয়। রাত ৩টে ৩-এ শেষবার কথা হয় বন্ধুর সঙ্গে। মাঝে একবার অয়ন জানান, বান্ধবীর মা তাঁর বুকে আঘাত করায়, ব্যথা করছে। এরপর বন্ধুরা সবাই মিলে ওই বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তাব দিলে অয়ন আপত্তি করেন। মাঝে ছাদে গিয়েও লুকিয়েছিলেন ওই তরুণ। বন্ধুর দাবি, বান্ধবী ওইদিন বাড়িতেই ছিলেন। বান্ধবীর বাবা আসার পরেই আটকে পড়েন অয়ন। এরপরই মারধর শুরু হয় বলে অভিযোগ।


হরিদেবপুরকাণ্ডে ধৃতদের জেরা করে গতকালই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, অয়ন মণ্ডল খুনের ব্লু-প্রিন্ট ছিল বান্ধবীর মায়ের। মারধরে প্ররোচনা দিয়েছিলেন তিনিই। হরিদেবপুরে দশমীর রাতেই বান্ধবীর বাড়িতে মারধরের জেরে মৃত্যু হয় বছর ২১-এর এই যুবকের। খুনের পর দেহ লোপাটের নির্দেশ দেন অয়নের বান্ধবীর বাবা। কিন্তু কী করে নৃশংসভাবে খুন করা হল অয়নকে? দেহ লোপাটের ছকই বা কষা হয়েছিল কীভাবে? পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার দশমীর রাতে বান্ধবীর সঙ্গে ফোনে কথা হয় অয়নের। রাত ১১টা নাগাদ, বান্ধবীর বাড়িতে পৌঁছন অয়ন। কিন্তু সেখানে তখন তাঁর বান্ধবী ছিল না। তাঁর মাকে জিজ্ঞেস করতে, তিনি অয়নকে জানান, মেয়ে অন্য বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গেছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, এ কথা শোনার পরই অয়নের সঙ্গে তাঁর বান্ধবীর মায়ের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। অশান্তি চলাকালীনই বাড়িতে ফেরে বান্ধবী ও তাঁর ভাই। জেরায় ধৃতদের দাবি করেছেন, উত্তেজিত অয়ন তখন চড়াও হন বান্ধবীর উপরে। সূত্রের খবর, উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে অয়নকে মারধরে প্ররোচনা দেন বান্ধবীর মা। অভিযোগ, এরপরেই ২১ বছরের অয়নের মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে বান্ধবীর ভাই। যুবকের বান্ধবীও বাঁশ নিয়ে তাঁর ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। পুলিশ সূত্রে দাবি, মারধরের জেরে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে অয়ন। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।


হরিদেবপুরে খুনের তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য: পুলিশ সূত্রে খবর, টার্গেট ছিল অয়নের মোবাইল ফোন। ওই ফোনে ছিল একাধিক ঘনিষ্ঠ ছবি ও ভিডিও। এই ভিডিও ও ছবি তোলাকে কেন্দ্র করেই বান্ধবী ও তাঁর মায়ের সঙ্গে গণ্ডগোলের সূত্রপাত অয়নের। তাই পরিকল্পনা করেই খুন করা হয় ওই তরুণকে, অনুমান পুলিশের।পুলিশ সূত্রে খবর, বান্ধবীর বাড়ির দোতলার ঘরে খুন হন অয়ন। অথচ ফরেন্সিক পরীক্ষায় এক ফোঁটা রক্তের নমুনা মেলেনি। খুনের পর শুধু দেহ লোপাট নয়, মুছে ফেলা হয় রক্তের দাগ। পুলিশ সূত্রে খবর, দশমীর রাতে অয়ন যখন বান্ধবীর বাড়িতে যান, তখন বাড়িতে একাই ছিলেন বান্ধবীর মা। তাঁর সঙ্গে অয়নের হাতাহাতি হয়। এরপরেই বাড়িতে আসেন অয়নের বান্ধবী, তাঁর বাবা, ভাই ও বন্ধুরা। এরপরই অয়নকে মারধর করা হয় বলে পুলিশের অনুমান। 


আরও পড়ুন: Hooghly News: নিখোঁজ নাবালিকার রহস্যমৃত্যু, ধুন্ধুমার জাঙ্গিপাড়ায়