সৌরভ মুখোপাধ্যায়, চুঁচুড়া: ভূতে ধরেছে সন্দেহে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছিল বছর ষোলোর এক কিশোরকে। হুগলি জেলার ব্যান্ডেল কেওটাতে ঘটা এমন অমানবিক ঘটনায় সাড়া পড়েছিল শহরে। বুধবার চুঁচুড়া সদর মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা ওই কিশোরের বাড়িতে যান। তাঁর সঙ্গে স্থানীয় কাউন্সিলর অনিন্দিতা মণ্ডল ও পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা সঙ্গে ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হেমন্ত বসু কলোনি এলাকায় এক কিশোর গত কয়েকদিন ধরে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেছিল। হাত পা ছুঁড়তে থাকে গালিগালাজ করতে থাকে। সামনে কাউকে পেলে তাকে মারধরও করতে যায়। একদিন সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফিরে হঠাৎ করেই তার এই আচরণ শুরু হয়। ভুতে ধরেছে সন্দেহে বাড়ির লোকেরা তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। ওঝার থেকে জল পড়া এনে খাওয়ানো, মাদুলি পড়ানো সবই করা হয়। তাতে কোনও কাজ হয়নি। এরপর চিকিৎসক দেখালে কিশোর ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকে। তখন তার শিকল খুলে দেওয়া হয়।
এখনও মানুষের মধ্যে কুসংস্কার রয়েছে ভূত প্রেতের। এগুলি দূর করতে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পক্ষ থেকে সচেতন করা হয় এলাকাবাসীদের।
বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য সন্দীপ সিংহ বলেন,"আমরা জানতে পেরে কিশোরের বাড়িতে আসি। ওঝা ঝাড়ফুঁক এসবের ফলে অনেক সময় মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তেমন ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য সচেতন থাকতে হবে।"
মহকুমা শাসক বলেন, "এখনো মানুষের মধ্যে কিছু কুসংস্কার রয়েছে।কিশোরের বাবা কুসংস্কার আচ্ছন্ন হয়ে বোঝার কাছে গেছেন তাতে সময় এবং অর্থ দুটোই ব্যয় হয়েছে।স্থানীয় কাউন্সিলর বা প্রশাসনের লোকজনকে জানালে হয়তো আরো আগে কিশোরের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেত।এখন নিউরো সাইক্রিয়াটিস্ট কে দেখানো হচ্ছে কিশোর অনেকটাই সুস্থ আছে।ক্লাস টেনের ছাত্র ভালোভাবে পড়াশোনা করুক এটাই আমরা চাই।"
কিশোরের বাবা বলেন, "সবাই পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ভালো লাগছে।ছেলে আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ হয়েছে।"
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: Bankura News: বিরোধীদের প্রতি প্রতিহিংসা নয়, বার্তা বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীর