কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: থরে থরে সাজানো নোটের বান্ডিল নিয়ে আচমকায় টার্গেটের কাছে হাজির হতেন প্রতারকরা,তারপরই শুরু হত টাকা কুড়িয়ে পাওয়ার গল্প।এরপরই সুযোগ বুঝে গহনা হাতিয়ে চম্পট দিত প্রতারকদের দল। মেমারী থানার অভিযানে পর্দাফাঁস চক্রের,গ্রেফতার ৩ পান্ডা।


পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে,নোটের বান্ডিলের উপরে ও নিচে আসল টাকা ও ভিতরে নকল টাকা সাজিয়ে বাণ্ডিল তৈরি করে প্রলোভন দেখিয়ে সুযোগ বুঝেই গহনা হাতিয়ে চম্পট দিত এই চক্রের পান্ডারা।গোপনসূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতেই, মেমারি বাসস্ট্যাণ্ড এলাকা থেকে  গতকাল তাদের গ্রেফতার করা হয়।ধৃত নির্মল রায়,মলিন দাস ও গোপাল শর্মা।তাঁদের বাড়ি যথাক্রমে ব্যারাকপুর,কল্যানী ও চাকদা এলাকায়। 


জানা গিয়েছে, প্রতারকরা মূলত মহিলাদেরই টার্গেট করতো।এরপরই নকল নোটের বান্ডিলের আড়ালে ওপরে ১০০ বা ৫০০ টাকার আসল  নোট রেখে টাকার বান্ডিল বানিয়ে বাসট্যান্ডে ও স্টেশনের মতো জায়গায় টাকা কুড়িয়ে পাওয়ার গল্প ফাঁদতেন। প্রলোভন দেখিয়ে শরীরে থাকা অলংকার নিয়ে চম্পট দিত প্রতারকরা।সমগ্র জেলাজুড়েই সক্রিয় ছিল এই প্রতারণা চক্র। কীভাবে চালাতো এই অপারেশন প্রতারকরা? 


পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনজন ব্যক্তি প্রথমে নকল নোট বা কাগজের বান্ডিল তৈরি করে তার ওপরে আসল ১০০ বা ৫০০ টাকার নোট লাগিয়ে সাধারণত বাসস্ট্যান্ড বা স্টেশন এলাকায় সাধারণ যাত্রী সেজে দাঁড়িয়ে থাকতেন। এরপর মহিলাদের টার্গেট করতেন। প্রথমে একজন প্রতারক সোনার গহনা পড়া কোনও মহিলাকে টার্গেট করে মহিলার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতেন। এর কিছুক্ষণ পর অন্য আরও একজন প্রতারক দলের সদস্য গিয়ে নোটের বান্ডিলগুলি কুড়িয়ে পাওয়ার অভিনয় করতেন।  


 প্রতারকরা মহিলাকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে  টাকাগুলো ভাগাভাগি করার জন্য বলতেন।এমনকি মহিলার বিশ্বাস অর্জনের জন্য টাকার বান্ডিল গুলি মহিলার ব্যাগে রাখা হত।পাশাপাশি মহিলাকে তাঁরা গহনা ছিনতাই হয়ে যাবার ভয় দেখিয়ে গহনা গুলি খুলে ব্যাগে রেখে দেওয়ার পরামর্শ দিত। এরপরই সুযোগ বুঝে মহিলার গহনাভর্তি ব্যাগ নিয়ে চম্পট দিত প্রতারকরা।


আরও পড়ুন, ভরাডুবি নিয়ে বেসুরো, সৌমিত্র খাঁকে নেতৃত্বের তলব


বেশ কিছুদিন ধরেই বিভিন্ন জায়গা থেকে এই ধরণের প্রতারণার খবর আসছিল।এরপরই গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে মেমারি বাসস্ট্যান্ডে অভিযান চালায় পুলিশ। ৩ ব্যক্তিকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা প্রতারণার কথা স্বীকার করে  নেয়। বুধবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করে মেমারি থানার পুলিশ।এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তাঁর খোজে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।