ব্যান্ডেল: সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি:  ব্যান্ডেলে (Bandel) লোকালয়ে ঢুকে দুঃসাহসিক ডাকাতি করে গেল দুষ্কৃতীরা। তা-ও আবার সন্ধের কিছু পরেই। ভাড়া (House on Rent)  দেওয়ার জন্য ঘর খালি রয়েছে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন প্রবীণ দম্পতি (Elderly Couple)। অভিযোগ, তাতেই ঘর দেখার ছলে বাড়িতে ঢোকে চার দুষ্কৃতীর (Dacoity) একটি দল। অন্য কেউ নেই দেখে আগ্নেয়ান্ত্র দেখিয়ে প্রবীণ দম্পতিকে বেঁধে ফেলে তারা। তার পর সব কিছু লুঠ করে চম্পট দেয়।


শনিবার সন্ধের কিছু পরে, রাত ৮টা নাগাদ হুগলির (Hooghly) ব্যান্ডেলের বিক্রম নগরে এমনই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজেদের দোতলা বাড়িতে থাকেন দেবনারায়ণ দত্ত এবং তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি দত্ত। তাঁদের একমাত্র ছেলে কর্মসূত্রে থাকেন ওড়িশায়। নীচের তলার ঘরটি অঙ্কন মিত্র নামের এক যুবককে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন ওই দম্পতি।


কিন্তু সম্প্রতি ভাড়া ছেডে় উঠে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অঙ্কন। সে কথা বাড়ির মালিককে জানান। তাতে নতুন ভাড়াটের জন্য বাড়ির বাইরে ‘টু লেট’ অর্থাৎ ‘ঘরভাড়া আছে’ লেখা একটি কাগজ সেঁটে দেন দেবনারায়ণ। এ দিন সন্ধের পর আচমকাই দরজায় বেল বাজতে শুনে মুখ বাড়িয়ে চার যুবককে দেখতে পান তিনি। কী দরকার জানতে চাইলে তাঁরা জানান, বাড়ি ভাড়ার বিজ্ঞাপন দেখে এসেছেন।


আরও পড়ুন: Madan Mitra: 'প্রতিবার মার খেতাম, কোনও বিচার আমি পাইনি', সোশাল মিডিয়ায় সরব মদনের পুত্রবধূ


ওই চার জনকে দিনের বেলায় ঘর দেখতে আসতে বলেন দেবনারায়ণ। কিন্তু অভিযুক্তরা জানান, দিনের বেলা কাজে ব্যস্ত থাকেন তাঁরা। সময় হবে না। কবে ভাড়া, কবে ঘরে ঢোকা যাবে, দু’এক মিনিটে কথা সেরেই চলে যাবেন। কিন্তু কিন্তু করেও শেষমেশ তাঁদের বাড়িতে ঢুকতে দেন দেবনারায়ণ।


পুলিশকে দেওয়া বয়ানে দেবনারায়ণ জানিয়েছেন, উপরে এসে প্রথমে কথা শুরু করেন চার জন। ঘরে ডাকলে এক জন জলও চান। তাতে তিনি পিছন ঘুরতেই তাঁর মুখ চেপে ধরা হয় পিছন থেকে। মাথায়  এক জন আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকান অন্য জন। আর এক জন দেবনারায়ণের স্ত্রী অঞ্জলিকে টেনে আনেন। তার পর সকলে মিলে দম্পতিকে বেঁধে ফেলেন, টেপ আটকে দেওয়া হয় মুখে।


এর পর আলমারি, লকার খুলে দুষ্কৃতীর দল লুঠপাট শুরু করে বলে অভিযোগ দেবনারায়ণের। ওই দম্পতি জানিয়েছেন, আলমারি খুলে নগদ টাকা, সোনার গয়না বার করে ব্যাগে ঢোকায় দুষ্কৃতীর দল। প্রায় চল্লিশ মিনিট ধরে সব তছনছ করে লুঠপাট চালায় তারা। তার পর সিঁড়ি দিয়ে নেমে পালিয়ে যায়।


দুষ্কৃতীরা চলে গেলে অনেক কষ্টে নিজেকে বাঁধন থেকে মুক্ত করেন দেবনারায়ণ। স্ত্রীর বাঁধনও খুলে দেন। তার পর নীচে নেমে ভাড়াটে অঙ্কনকে ডাকেন। তাতে শোরগোল পড়ে যায় পাড়ায়। প্রতিবেশিরা সকলে ছুটে আসেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।


চুঁচুড়া থানার পুলিশ বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে। শহরের ঢোকা-বেরনোর রাস্তায় নাকা চেকিং চলছে। মগরার কল্যাণী সেতু হয়ে দুষ্কৃতীর দল গঙ্গা পেরোতে পারে বলে সন্দেহ পুলিশের। তার জন্য শঙ্খনগরেও নাকা-তল্লাশি শুরু হয়েছে।