সোমনাথ মিত্র, হুগলি: বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে কর্মসংস্কৃতির বার্তা দিলেন তৃণমূল বিধায়ক (TMC)। সিঙ্গুরের (Singur) পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও উন্নয়নমূলক কাজ ফেলে রাখা যাবে না। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বার্তা রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্নার (Becharam Manna)। আসন্ন ভোটের কথা মাথায় রেখেই এসব কথা, তৃণমূল বিধায়ককে কটাক্ষ বিরোধীদের।


পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কাজকে প্রাধান্য দেওয়ার বার্তা 


আগামী বছর ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলে হতে পারে পঞ্চায়েত ভোট। গ্রাম বাংলায় ভোটের জল্পনার মধ্যেই বিজয়া সম্মিলনীর মাধ্যমে জেলায় জেলায় জনসংযোগ বাড়াতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার সিঙ্গুরে আয়োজন করা হয়েছিল তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী।


সেই মঞ্চ থেকেই থেকে পঞ্চায়েতের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের উদ্দেশে কর্মসংস্কৃতির বার্তা দিলেন রাজ্যের কৃষিজ বিপণন রাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্থানীয় বিধায়ক বেচারাম মান্না।


ওই সভা থেকে বেচারাম বলেন, "পঞ্চায়েতে যে স্কিমগুলো নেওয়া রয়েছে তা দ্রুত রূপায়ন করতে হবে। যেন প্রধান, উপপ্রধান, পঞ্চায়েতের কর্মীর জন্য রাস্তার কাজ থমকে না যায়। কেন্দ্র টাকা দেবে না, কারণ তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা করছে, কিন্তু রাজ্যের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই টাকা নিজের ফান্ড থেকে দিয়ে গরিবদের বাড়ি তৈরি করে দেবে। আর এই গরিব মানুষেরাই মুড়ো ঝাঁটা নিয়ে গ্রামবাংলা থেকে বিজেপি-কে তাড়াবে।"


আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: "পুলিশও তৃণমূলকে বাঁচাতে পারবে না'' ফের হুঁশিয়ারি শুভেন্দু অধিকারী


তৃণমূল বিধায়কের কর্মসংস্কৃতির বার্তা  নিয়ে যদিও কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। তাদের প্রশ্ন, ভোটের আগে ঘুম ভাঙল তৃণমূল নেতার! বিজেপি-র হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তুষার মজুমদার বলেন, "পঞ্চায়েতে যে কোন উন্নয়নমূলক কাজ হয় না তা অতি দ্রুত করে নেবার কথা থেকেই উনি স্বীকার করছেন। তাছাড়া এখন প্রধানমন্ত্রী যেই আবাস যোজনার ঘরের টাকা ছাড়বেন বলছেন তখনই উনি বলছেন আমরা টাকা দেব। এতদিন দেননি কেন? এসব রাজনীতির কথা। মানুষ ঝাঁটা মারবে তাদের যারা চুরি করেছে, বিজেপি-কে নয়।"


অন্য দিকে, হুগলিতে ডিওয়াইএফআই-এর সভাপতি সুমন মাল বলেন, "ভোট আসছে বলে এখন কাজের আগ্রহ জেগেছে, পাঁচ বছর পঞ্চায়েত ঘুমিয়ে ছিল। তাই মানুষকে দেখাতে হবে কাজ করছি, বাস্তবে পক্ষায়েতে গত পাঁচ বছরে কোন কাজ হয়নি। এই জন্যেই বলতে হচ্ছে এখন সব কাজ করে নিতে হবে। গরিবরা ঘর পাচ্ছে না, অথচ যাদের পাকা বাড়ি তারা ২বার করে ঘর পাচ্ছে। ১০০ দিনের কাজে ব্যাপক দুর্নীতি, তাই কাজ বন্ধ। এর দায় কার?"


পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি তুঙ্গে জেলায়


যদিও বিরোধীদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। সিঙ্গুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি গোবিন্দ ধাড়া বলেন, "বিগত বছরের সমস্ত কাজ শেষ। চলতি বছরের যে কাজ পড়ে আছে তা দ্রুত শেষ করার কথা বলেছেন মন্ত্রী, কারণ নির্বাচন ঘোষণা হলে আর কাজ করা যাবে না। বিরোধীদের ধর্ম কটাক্ষ করা, এটা নিয়ে রাজনীতি করা। সরকারি কাজের সোশ্যাল অডিটে ৪ নম্বরে রাজ্য। তাই মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।" তৃণমূল সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত ভোটের আগে, রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলিকে আরও বেশি করে ভোটারদের সামনে তুলে ধরা হবে।