বাপন সাঁতরা, হুগলি: নিম্নচাপের জেরে হওয়া বৃষ্টিতে জেরবার দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশ। হুগলিতেও চলছে বৃষ্টি। লাগাতার বৃষ্টির জেরে ও খালের জল উপচে জলমগ্ন গোঘাটের একাধিক গ্রাম। জল উঠেছে একাধিক বাড়িতে। স্রোত বয়ছে রাজ্য সড়কে। জল থই-থই অবস্থা মাঠের জমিতে। ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক মাটির বাড়ি। আপাতত যোগাযোগ বন্ধ কামারপুকুর থেকে বদনগঞ্জগামী রাজ্য সড়কের উপর। যার জেরে সমস্যায় সাধারণ মানুষ।
নিম্নচাপের জেরে তিন দিন ধরে চলছে টানা বৃষ্টি। একদিকে সেই বৃষ্টির জমা জল, অন্যদিকে বাঁকুড়ার দিক থেকে নেমে আসা জল, বিভিন্ন খাল উপচে জলমগ্ন হয়ে পড়ে গোঘাটের শ্যামবাজার, পশ্চিমপাড়া, কামারপুকুর পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রাম। নীচু এলাকার বাড়ির উঠানে উঠে যায়। জল পেরিয়ে চলছে গ্রামের মানুষের যাতায়াত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক মাটির বাড়িও। শ্যামবাজার পঞ্চায়েতের প্রধান প্রভাত গোস্বামীর দাবি, ইতিমধ্যেই প্রায় ১৫ টি মাটির বাড়ি কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। কোথাও ভেঙে পড়েছে বাড়ির দেওয়াল। অন্যদিকে, জলে ডুবেছে একাধিক এলাকার চাষের জমি। তার জেরে সবজি সহ বিভিন্ন ফসলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় চাষিরা। পাশাপাশি, কামারপুকুরের সাতবেড়িয়ে এলাকায় রাজ্য সড়কের উপর জলের স্রোত বয়তে থাকায় একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায় বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও হুগলির একাংশের যোগাযোগ। যদিও অনেকেই বিপদজনক ভাবেই পারাপার করছে ওই রাজ্য সড়কে।
ঝাড়গ্রামেও প্রবল বৃষ্টি:
নাগাড়ে বৃষ্টির ফলে ফুলেফেঁপে উঠেছে ডুলুং নদীর জল। জামবনি ব্লকের চিল্কিগড় এলাকায়,কজওয়ের উপর দিয়ে বিপদসীমার ওপর বইছে জল। যার ফলে ঝাড়গ্রামের সঙ্গে জাম্বনি ব্লকের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন গ্রাম। সমস্যায় যেমন পড়েছেন সাধারণ মানুষ। দূর দূরান্ত থেকে আসা গাড়ির লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে খুব সহজেই ও কম সময়ে ঝাড়খন্ড এবং জাতীয় সড়কের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। টানা বৃষ্টির জেরে আতঙ্ক বাড়ছে ঝাড়গ্রাম জেলার ওপর বয়ে যাওয়া কংসাবতী, সুবর্ণরেখা,ডুলুং নদীর তীরবর্তী এলাকার বসতি অঞ্চলে।
এখন অতি গভীর নিম্নচাপ দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমে অবস্থান করছে। বিকেল পর্যন্ত অতি গভীর নিম্নচাপ রূপেই থাকবে। পশ্চিমের জেলাগুলি থেকে এই সিস্টেম যাবে ঝাড়খন্ড অভিমুখে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় এটি ঝাড়খন্ড ও উত্তর ছত্রিশগড় এলাকায় পৌঁছবে, শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপ রূপে অবস্থান করবে। মৌসুমী অক্ষরেখা সক্রিয় রয়েছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। বাঁকুড়া দিয়ে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের অতি গভীর নিম্নচাপ এলাকার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ ও সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। রবিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে আবহাওয়া দফতর। উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকবে। ৫০ থেকে ৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় দমকা ঝোড়ো বাতাস বইবে। দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলাতে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা থাকবে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ ও ব্যাপকতা কমবে। বাঁকুড়া পুরুলিয়া ঝাড়গ্রাম পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পশ্চিম বর্ধমান এই জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি থাকবে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।