সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: একদিন, দু'দিন নয়। টানা দু'সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রেশনের কাজ। থমকে রয়েছে সরকারি রাজস্ব আদায়ের কাজও। বন্ধ রয়েছে হুগলি জেলার সাব রেজিস্টার অফিসের একাধিক কাজ। যার জেরে সমস্যায় পড়েছে সাধারণ মানুষ থেকে দলিল তৈরির লেখকরাও। আইনত পদ্ধতিও বন্ধ রয়েছে।
রাজ্য বাজেটের দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প ডিউটির উপর ২ শতাংশ ছাড়া দেওয়া হবে। সরকার নির্ধারিত জমির দাম বা ভ্যালুয়েশনের উপর ১০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। এই নতুন ব্যবস্থা কার্যকর করতে এক বেসরকারি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, গত দু সপ্তাহ ধরে ই-নথিকরণ ও ওয়েস্ট বেঙ্গল রেজিস্ট্রেশন ওয়েব সাইট সংস্কারের কাজ চলায় সব রকমের রেজিস্ট্রেশন বন্ধ রয়েছে।
এর জেরে হুগলি জেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসের কাজকর্ম বন্ধ রয়েছে বর্তমানে। ল-ক্লার্কদের অভিযোগ জমির দাম নির্ধারণের জন্য যে আধুনিক ও উন্নতমানের সফটওয়্যার রয়েছে তাঁর ব্যবহার সকলকের কাছেই প্রায় অজানা। দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা সেই সফটওয়্যারের কাজের সঙ্গে এখনও অভ্যস্ত হয়ে উঠতে না পারায় দেরি হচ্ছে কর্মপদ্ধতিতে। ফলে এই সংক্রান্ত কাজ আপাতত স্থগিত রাখতে বাধ্য হচ্ছেন আধিকারিকরা।
এদিকে, জমি কেনা বেচার কাজ গোটাটাই এখন কম্পিউটারের মাধ্যমেই করা হয়। আগে হাতে হাতে করা হলেও এখন গোটা প্রক্রিয়াটাই প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল। অথচ আধুনিকীকরণের জেরে সমস্যায় পড়েছেন অনেকেই। যাদের জরুরি ভিত্তিতে জমি বিক্রির প্রয়োজন তারা সমস্যায় পড়েছেন। এছাড়াও দলিল লিখে বা রেজিস্ট্রেশনের কাজ করিয়ে পেট চলে বেশ দলিল লেখক ও ল-ক্লার্কদের। এই ঘটনায় এখন সমস্যায় পড়েছেন তাঁরাও।
অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আদায়ও থমকে গিয়েছে। হুগলি জেলা সাব রেজিস্টার-১ জয়ন্তী মুখোপাধ্যায় বলেন, "এটি একটি নতুন সিস্টেম এসেছে। যা নিয়ে টেকনিক্যালি একটা সমস্যা হচ্ছে। সেই সমস্যা এখনও কাটিয়ে ওঠা যায়নি। তাই রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে না। নতুন কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে সেগুলিকে সফটওয়্যারে বসানোর কাজ করানো হচ্ছে। যা নিয়েই সমস্যা হচ্ছে। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে দ্রুত সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যায়।" জেলা সাব রেজিস্ট্রার-২ অনাদি বিশ্বাস জানান, সার্ভার ঠিকঠাক করছে। কিছুদিনের মধ্যেই হয়ত ঠিক হয়ে যাবে। তবে কবে হবে, সেই নির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখনই বলা সম্ভব নয়।