সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঁশবেড়িয়া (হুগলি) : এ যেন উলটপুরাণ ! বিজেপি করেন, তাই জোর করে তাঁর বুকে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে টিএমসি লিখে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা বিজেপি কর্মীই (BJP Worker) যোগ দিলেন তৃণমূলে (TMC)। শাসকশিবিরে নাম লেখালেন বাঁশবেড়িয়ার বিজেপি কর্মী বিষ্ণু চৌধুরী।
কখনো দাবি আদায়ের জন্য মোবাইল টাওয়ারে বা নারকেল গাছে উঠে পড়েছেন। কখনো আবার নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রী করতে হবে, এই দাবিতে সাইকেল চালিয়ে গুজরাত থেকে দিল্লি হয়ে বাংলা সাড়ে তিন হাজার কিমি রাস্তা পাড়ি দিয়েছেন। ২০১৩ সালে। রাজনৈতিক ও অন্যান্য কারণে মোট সাতবার জেলও খেটেছেন। শুধু তাই নয়, ২০১৪ সালে মারাত্মক অভিযোগ তোলেন বাঁশবেড়িয়ার তৃণমূল নেতা রাজা চ্যাটার্জির বিরুদ্ধে। বিজেপি করার জন্য তাঁর বুকে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে টিএমসি লিখে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ জানান। সেই ঘটনা নিয়ে জেলা রাজনীতিতে হইচই পড়ে গিয়েছিল। যদিও রাজা চ্যাটার্জি দাবি করেছিলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। প্রচারে আসার জন্য এসব নাটক করেছেন বিষ্ণু।
সেই ঘটনার পর পুরভোটে বাঁশবেড়িয়ায় একটি ওয়ার্ডে জয়ীও হয় বিজেপি। এরপর বিষ্ণুকে মণ্ডল সভাপতি করা হয়। পরে ওবিসি মোর্চার ঝাড়গ্রাম অবজারভার, জেলা শ্রমিক সংগঠনের সভাপতির পদও পান। এহেন বিষ্ণুই এবার বিধায়ক তপন দাশগুপ্তর হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিলেন।
এনিয়ে রাজা চ্যাটার্জি বলেন, বিষ্ণু চৌধুরী বিজেপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য নানা কাণ্ড করতেন। আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে সিগারেটের ছ্যাঁকার অভিযোগ করেছিলেন। বিধানসভা ভোটের সময় থেকে দেখছি, বিজেপির প্রতি একটু বিরাগ হয়েছে। বিজেপি থেকে মানুষ যত সরে আসবে বুঝতে হবে তার মাথা কাজ করছে।
এদিকে দল পরিবর্তন নিয়ে বিষ্ণু চৌধুরী বললেন, যারা একটা সময় আমাদের কর্মীদের অত্যাচার করেছিল তারাই এখন বিজেপি নেতা। ১২ বছর লড়াই করেছি যাদের বিরুদ্ধে, তারা এখন বিজেপিতে। পুরসভা ভোটেও যাদের টিকিট দেওয়া হয়েছে, সেখানে দলের আদর্শ মানা হয়নি। বিজেপির আদর্শ নিয়ে খেলা করা হয়েছে। বিজেপির আদর্শ বলে আর কিছু নেই। তাই তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। মানুষের কাজ করতে চাই।