জাঙ্গিপাড়া (হুগলি) : জাঙ্গিপাড়ায় (Jangipara) নিখোঁজ নাবালিকার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় তুলকালাম। নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের (Murder) আশঙ্কা প্রকাশ করল বিজেপি। শতাধিক মানুষের তাড়ার মুখে পালাতে বাধ্য হলেন কংগ্রেসের ১২ জন প্রতিনিধি। গ্রামবাসী নয়, বাধা দিয়েছে তৃণমূল, এমনই দাবি করল কংগ্রেস-বিজেপি। যদিও বিরোধীরা মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছে বলে পাল্টা দাবি করেছে শাসকদল।
'রাজনীতি নয়, শুধুই দোষীদের শাস্তি চায়'-
৩ দিন ধরে যখন নিখোঁজ ছিল নাবালিকা, কেউ আসেনি। আজ যখন সব শেষ, তখন হুগলির জাঙ্গিপাড়ার এই পাড়ায় আনাগোনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের। কিন্তু, আজ রাজনীতি নয়, শুধুই দোষীদের শাস্তি চায় তারা। বিজলি টুডু নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, কোনও পার্টির নেতার এখানে আসা চলবে না। আমাদের লক্ষ্মী আজ কোল থেকে কেড়ে নিয়েছে।
এদিকে জাঙ্গিপাড়ায় নিখোঁজ নাবালিকার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ধর্ষণ করে খুনের আশঙ্কা প্রকাশ করলেন বিজেপি নেত্রী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ এলাকা আসেন কংগ্রেসে প্রতিনিধিরা। কিন্তু, তাঁদের গ্রামে ঢুকতে বাধা দেয় ক্ষিপ্ত জনতা। এনিয়ে শুরু হয় বচসা।
শতাধিক মানুষের তাড়ার মুখে পালাতে বাধ্য হন কংগ্রেসের ১২ জন প্রতিনিধি।
জাঙ্গিপাড়ার কংগ্রেস নেতা কামাখ্যা নারায়ণ সিংহ বলেন, শাসকদলের নেতারা উস্কে দিয়েছেন। অনেক পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। আমাদের তো রাজনীতি করা উদ্দেশ্য ছিল না। আমরা ওখানে গিয়েছিলাম, পরিবারের পাশে দাঁড়াতে।
যদিও পরিবহণ মন্ত্রী ও জাঙ্গিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তীর বক্তব্য, কুৎসার রাজনীতি চায় না মানুষ।
কংগ্রেস প্রতিনিধিরা বাধার মুখে পড়ার ঘণ্টাখানেক পর এসে পৌঁছয় বিজেপির প্রতিনিধিদল। প্রথমে জাঙ্গিপাড়া থানায় যায় বিজেপির প্রতিনিধিদল। রাজ্য বিজেপির সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল বলেন, পরিবার তো যখন দশমী থেকে খোঁজ করছিল, তখনই জানিয়েছিল। তখন তো কোনও তৎপরতা দেখাননি। তৎপরতা দেখালে বাচ্চা মেয়েটি বেঁচে থাকত। এখন ৪৮ ঘণ্টা কেন চাইছে ? পরিবারকে বলতে চাই, আপনাদের জন্য আমরা লড়ব। আমি মামলা হাতে নেব।
ঘড়িতে রবিবার দুপুর ১টা ৩ মিনিট। গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করলে প্রথমে বাধার মুখে পড়ে বিজেপি প্রতিনিধি দলের গাড়ি। গাড়ি থেকে নেমে পড়েন প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল, প্রণয় রায়-সহ অন্যান্যরা। আইনি লড়াইয়ে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। তিনি বলেন, পুলিশ আমাকে আসতে দিচ্ছিল না। আমি বলেছি, আমি প্রত্যেকটি মামলা লড়েছি। আমি কিন্তু কোনও হিসেবে, ওখানে যাবই যাব। পরিবারের সঙ্গে কথা বলব। আপনারা কি চাইছেন আমরা লড়ি আপনাদের জন্য ? তখন গ্রামবাসী বলেন- হ্যাঁ, অবশ্যই। পাল্টা প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল বলেন, আমাকে মায়ের সঙ্গে দেখা করান। তখন গ্রামবাসী বলেন- একা চলো। এখানে কোনও রাজনীতির ব্যাপার না। বাচ্চা মরেছে।
এপ্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির অফিস সম্পাদক প্রণয় রায় বলেন, গ্রামের মানুষ নয়, বাধা দিচ্ছে তৃণমূল। আমরা বিরোধী বলে বাধা।
যদিও রাধানগরের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য নিতাই মালিক বলেন, রাজনীতি করতে এসেছিল। আমরা চাই, যে দোষী সে শাস্তি পাক। প্রশাসন ভাল কাজ করছে।
এদিকে, নাবালিকার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের তরফেও জাঙ্গিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন ; 'পুলিশে আস্থা নেই', জাঙ্গিপাড়ায় নাবালিকার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি পরিবারের