মোহন দাস, আরামবাগ : বিধানসভা ভোটের পর থেকে এলাকায় দেখা মিলছে না আরামবাগ মহকুমার চার বিজেপি বিধায়কের। এমনই অভিযোগে সরব হলেন এলাকার বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ। তা নিয়ে গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, পুরোটাই তৃণমূলের ষড়যন্ত্র।


গোঘাটের বিজেপি নেতা জগন্নাথ রায় বলেন, "এত কষ্ট করে বিধায়কে জেতালাম। তাঁকে ফোনে পাওয়া যায় না। সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না। তাহলে কর্মীরা কেনই বা দল করবেন ?"


"বিধানসভা ভোটের পর থেকে এলাকায় দেখা নেই বিজেপি বিধায়কদের। সাম্প্রতিক বন্যায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়াননি তাঁরা। দলের নেতা-কর্মীরাই বিজেপি বিধায়কদের দেখা পাচ্ছেন না। সাধারণ মানুষ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন কীভাবে?" এ কোনও বিরোধী দলের অভিযোগ নয়! বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন দলেরই নেতা-কর্মীদের একাংশ!


আরামবাগ মহকুমার ৪ বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষ, খানাকুলের বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ, গোঘাটের বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক ও আরামবাগের বিধায়ক মধুসূদন বাগকে কোনও কাজে পাওয়া যায় না। 


আরামবাগের বিজেপি নেতা সাহেব পাত্র বলেন, "আমরা বিধায়কদের দেখাই পাচ্ছি না। তাঁদের কষ্ট করে জেতানো হল, এখন তাঁরা পাশে নেই। সাধারণ মানুষের পাশেও নেই। এত বড় বন্যা হল, বিধায়কের দেখা নেই। শুধু কিছু ত্রাণ পাঠিয়েছেন। তাতে কী সুবিধা হয় ? মানুষের পাশে না থাকলে কীসের বিধায়ক। দিল্লিতে গিয়ে ফেসবুকে ছবি ছাপতে ব্যস্ত।"


আরামবাগের বিজেপি কর্মী অতনু কুণ্ডু বলেন, বিজেপি বিধায়ককে জেতানো হয়েছে। অথচ কোনও পাত্তা নেই। ঘরেই বসে রয়েছেন। ঘরে বসে থেকে সব হয় ?


দলের বিধায়কদের নামে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন দলেরই কর্মীদের একাংশ। এর পিছনে তৃণমূলের ষড়যন্ত্র দেখছে বিজেপি নেতৃত্ব। কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক শিবির। 


যদিও পুরশুড়ার বিধায়ক ও আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি  বিমান ঘোষ বলেন, গোটাটাই তৃণমূলের ষড়যন্ত্র। আমরা বন্যার সময় মানুষের পাশে ছিলাম। যাঁরা বিজেপি কর্মী, তাঁরা এধরনের কথা বলতে পারেন না।


তৃণমূল নেতা ও আরামবাগ পুরসভার প্রশাসক স্বপন নন্দী বলেন, বিজেপি বিধায়কদের দেখা মিলছে না। বিজেপির নেতা-কর্মীদেরও দেখা যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষ দরকারে পাচ্ছেন না। আমরা সব সময় পাশে আছি।  বিজেপি কর্মীদের পাশেও সব সময় আছি।


গত লোকসভা ভোটে বিজেপি হুগলিতে ভাল ফল করলেও, এবার বিধানসভা ভোটে জেলায় কার্যত একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করেছে তৃণমূল। হুগলি জেলার মোট ১৮টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপি যে ৪টি আসনে জয়ী হয়েছে, সেই ৪টি আসনই আরামবাগ মহকুমার অন্তর্ভুক্ত। আর সেই আরামবাগ মহকুমাতেই বিজেপির জনপ্রনিধিদের বিরুদ্ধে এখন সোচ্চার দলীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ।