সোমনাথ মিত্র, হুগলি : করোনা আবহে চলছে শারদোৎসবের প্রস্তুতি। এই পরিস্থিতিতে গত বছরের চেয়ে বাড়তি অর্ডার পেয়ে, আশার আলো দেখেছিলেন শোলা শিল্পীরা। কিন্ত করোনার জেরে কাঁচামালেই পড়েছে টান। যেটুকু মিলছে মানের চেয়ে তার দামও চড়া বলে জানাচ্ছেন শিল্পীরা। আর তার জেরেও অর্ডার পেয়েও, মুখে হাসি নেই হুগলির শিল্পীদের।


সাদা শোলার কারুকাজে রঙের ছোঁয়া। কখনও আবার রং এড়িয়ে শুধু সাদাতেই মনোমুগ্ধকর শিল্প। সেই শিল্পের ছোঁয়াতেই সেজে ওঠেন মৃন্ময়ী প্রতিমা। 
থিমের যুগেও, সাবেকি প্রতিমার ডাকের সাজের জৌলুস এতটুকু ম্লান হয়নি। কিন্তু যে ডাকের সাজ ছাড়া একসময় পুজো হত না, সেই শিল্পীরাই আজ সমস্যায়। হুগলির সিঙ্গুরের বারুইপাড়া -পলতাগড় পঞ্চায়েত এলাকায় চার পুরুষের বেশি বাস শোলা শিল্পীদের। পুজোর মুখে এবারও ব্যস্ততা তাঁদের। গত বছরের খরা কাটিয়ে করোনা আবহে দুর্গাপুজোয় বাড়তি অর্ডার মিলেছে। কিন্তু তবু মুখের হাসি চওড়া হচ্ছে না তাঁদের। কারণ, করোনা আবহে কাঁচামালের অভাবের পাশাপাশি আগুন দাম। ফেরাতে হচ্ছে অর্ডার।


সিঙ্গুরের শোলা শিল্পী রথীন মালাকার বলেছেন, 'কলকাতায় বিধাননগরে শোলার মার্কেট থেকে শোলা আসত। করোনা আবহে হাট বন্ধ। য়েটুকু মিলছে তার মান ভাল নয়। দামও অনেক বেশি। জলা জমি বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে, কমছে শোলা। এই দাম দিয়ে জিনিস কিনে পোষাতে পারব না বলেই অনেক অর্ডার ফেরাচ্ছি।' এই পরিস্থিতিতে মজুত থাকা শোলা দিয়েই চলছে কাজ। হাত লাগিয়েছে বাড়ি ছোট সদস্য থেকে বয়স্করাও। শোলা শিল্পীর ছেলে অরিত্র মালাকার বলেছেন, 'বাবা কাজ করছে। আমি বাবাকে সাহায্য করছি। শোলা কাটতে পারি না। বাবা কাটে আমি বসিয়ে দিই।'


কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি, জোগানের অভাব, লাভের অংশ কমে যাওয়ায় ইদানীং পেশা থেকে মুখ ফেরাচ্ছে বর্তমান প্রজন্মও। এই পরিস্থিতিতে সরকারি সাহায্যের প্রত্যাশায় শিল্পীরা। রথীন মালাকার আরও বলেন, 'সরকার যদি কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা করত ভাল হত। এটুকুই।' এদিকে, সিঙ্গুরের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তপন মালিক বলেছেন, 'অসংগঠিত শ্রমিকদের জন‍্য সরকারের সামাজিক সুরক্ষা যোজনা আছে। মালকাররা আবেদন করলে, খতিয়ে দেখা হবে । যোজনার আওয়াত পড়লে সরকারি সুযোগ সুবিধা পেতে পারেন।' একটু সাহায্য পেলেই বেঁচে যাবে শোলা শিল্প। ফের আসবে সুদিন, আশায় শিল্পীরা।


আরও পড়ুন- ফের রূপনারায়ণের জল ঢুকে প্লাবিত খানাকুলের তিন-চারটি গ্রাম, আতঙ্কে বাসিন্দারা


'দুয়ারে সরকার' কর্মসূচিতে বাড়ি বাড়ি রেশন দিতে গিয়ে আক্রান্ত রেশন ডিলার