সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, চুঁচুড়া: এবার শিক্ষক নিয়োগের দাবিকে ঘিরেও খেলা হবে স্লোগান উঠল হুগলির চুঁচুড়ায়। পুজোর আগে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়ে হুগলির জেলা সদরে হল মিছিল। মিছিল শেষে জেলাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি জমা দেন চাকরিপ্রার্থীরা।


আন্দোলনকারীদের দাবি, ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটে লিখিত ও মৌখিক দুটিতেই সফল হয়েছেন তাঁরা। প্যানেলভুক্ত হয়েছে নাম। চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, সাত বছর ধরে নিয়োগপত্র দেওয়া নিয়ে টালবাহানা চলছে। 


এমনই এক চাকরিপ্রার্থী আন্দোলনকারী মলয় গুঁই বলেন, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন ২০ হাজার টেট উত্তীর্ণ রয়েছেন। তাদের সবাইকে নিয়োগ করা হবে।শুধু নিয়োগ পত্র দেওয়া নিয়ে টালবাহানা চলছে। পর্ষদ সভাপতি এক রকম তথ্য দিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রী আরেক রকম দিচ্ছেন। আমরা চাই মুখ্যমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা রক্ষা করা হোক।


পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ওদের জানা উচিত ২০১৪ সালের টেটে পাস করা মানেই প্যানেলভুক্ত হওয়া নয়। তার মধ্যে ট্রেনড-নন ট্রেনড অনেকেই ছিলেন। এদের অনেকেই আবার বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে দিয়ে স্টে অর্ডার করিয়েছিলেন। তারপর ভাইভায় ডাক পেয়েও অনেকে পাশ করতে পারেননি।


গত ২১ জুন নবান্ন থেকে রাজ্যে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক মিলিয়ে মোট ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলা হয়, পুজোর আগে উচ্চ প্রাথমিকে ১৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। ওই সময়ের মধ্যে প্রাথমিকে নিয়োগ হবে সাড়ে ১০ হাজার শিক্ষক। পুজোর পর থেকে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত প্রাথমিকে আরও সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। 


শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে বহু মামলা হয়েছে। দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন চাকরি প্রার্থীদের একটি বড় অংশ। সোমবার খেলা হবে স্লোগান তুলে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ সামনে আসতেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। 


বিজেপি যুব মোর্চার হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুরেশ সাউ বলেন, তৃণমূল আমলে পরীক্ষা না দিয়েও পাশ করতে দেখেছি, শুধুমাত্র তৃণমূল করে বলে। যারা প্রকৃত পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে, তাদের কপালে চাকরি জোটে না। মাননীয়া খেলা হবে স্লোগান দিয়েছিলেন। কিন্তু চাকরি দেওয়ার খেলা হচ্ছে কই। নিজেদের মধ্য়ে খেলায় মগ্ন হয়ে গিয়েছে। ২০২৪ এ ভোটের আগে এই খেলায় সেম সাইড গোল না খেয়ে যায়।


 তৃণমূল বিধায়ক তথা হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তী পাল্টা বলেন, চাকরিপ্রার্থীদের বলব মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আস্থা রাখুন। বিজেপির ফাঁদে পা দেবেন না। 


সব মিলিয়ে টেট বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না রাজ্য সরকারের।