সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: কথা ছিল প্রতি মাসে মিলবে ১২ কেজি করে চাল। কিন্তু তা মেলে না বলে অভিযোগ। বারবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। প্রাপ্য রেশন (Ration) না পাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে। এমনই ঘটনার অভিযোগ উঠেছে হুগলির (Hooghly) পোলবায়। যাঁরা রেশন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তাঁরা সকলেই দুঃস্থ এবং বিশেষভাবে সক্ষম। গোটা ঘটনায় অভিযোগের তির উঠেছে স্থানীয় তৃণমূল (TMC) পঞ্চায়েত প্রধানের দিকে।

  


কী অভিযোগ:
হুগলির পোলবায় দুঃস্থ ও বিশেষভাবে সক্ষমদের বিনামূল্যের রেশন সামগ্রী চুরি করছেন স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান। এমনই অভিযোগ উঠছে। প্রায় ৪ বছর ধরে প্রাপ্য রেশন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। যদিও গোটা অভিযোগই অস্বীকার করেছে তৃণমূল প্রধান।  হুগলির পোলবা-দাদপুর ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত সাটিথান গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। 


বারবার অভিযোগ:
বিভিন্ন ভাবে দুর্নীতির অভিযোগে নাম জড়াচ্ছে শাসক দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের। ইতিমধ্যেই এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে প্রাক্তন মন্ত্রীর নাম জড়ানো নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। গ্রেফতারও হয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী। কয়লা পাচার-গরু পাচারের মতো অভিযোগেও বিদ্ধ তৃণমূল নেতারা। এবার রেশন সামগ্রী নিয়ে অসন্তোষের ঘটনাতেও চুরির অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। 


সমস্যা কোথায়?
সূত্রের খবর, প্রতিমাসে গরিব ও বিশেষভাবে সক্ষমদের বিনামূল্যে ১২ কেজি চাল-গম পাওয়ার কথা। গ্রাহকদের অভিযোগ, তাঁরা ৪ বছর ধরে রেশন সামগ্রী পাচ্ছেন না। মোট ৫১ তাঁদের জিআর বা জেনারেল রিলিফ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। এক রেশন গ্রাহক শেখ জন্নুর আহমেদ বলেছেন, 'মাসে ১২ কেজি করে চাল-গম দিত। ৪ বছর ধরে পাচ্ছি না। পঞ্চায়েতে সবটা জানিয়েছি। তাও পাইনি।' এমনকী এই অভিযোগ করেছে পঞ্চায়েতেরই আর এক তৃণমূল সদস্য। পোলবার সাটিথান গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য ঝুমা চক্রবর্তী বলেন, 'পঞ্চায়েত বলে জিআর দেওয়া হয়ে গিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানি বিলি হয়নি। এই ঘটনায় পঞ্চায়েত প্রধান জড়িত। গোটা পঞ্চায়েতে ঘুঘুর বাসা চলছে।' 


অভিযোগ অস্বীকার:
ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান অম্বালিকা ঘোষ বলেন, 'জিআর নিয়ে অভিযোগ মিথ্যা। ৪ বছরের নয়, ২ বছরের জিআর বাকি ছিল। ব্লক থেকে মেল না আসায় সমস্যা হয়েছে।'


বিজেপির খোঁচা:
বিনামূল্যের রেশন সামগ্রী চুরির অভিযোগ নিয়ে শুরু হয়েছে বিজেপি-তৃণমূল টানাপোড়েন। বিজেপির (BJP) রাজ্য কমিটির সদস্য ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে চুরি হচ্ছে। শুধু চাল নয় সব কিছু চুরি হচ্ছে।'


হুগলি জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, 'টেকনিক্যাল ফল্ট হয়েছে। বিডিওকে বলব দ্রুত সমাধান করতে। বিজেপির ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে।'


আরও পড়ুন: কাজে পুনর্বহালের দাবি, পুরুলিয়ার হাসপাতালে অস্থায়ী স্বাস্থ্য কর্মীদের বিক্ষোভ