সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরপাড়া (হুগলি): এখনও ভ্যাকসিন নেওয়া নিয়ে বিশৃঙ্খলা অব্যাহত জেলায় জেলায়। আর এই সমস্যা নিয়েই তৃণমূলকে ফের দোষারোপ করল বিজেপি। তাঁদের অভিযোগ, আগে ছিল স্বজনপোষণ আর এখন ভ্যাকসিনেও চলছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। অন্যদিকে, পুর প্রশাসকের দাবি, সরকারি নির্দেশে নিয়ম মেনেই চলছে টিকাকরণ প্রক্রিয়া। ভ্যাকসিনেশন নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হল উত্তরপাড়ায়।
উত্তরপাড়া জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরিতে আজ করোনা টিকা দেওয়ার সময়ে তুমুল বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বেশ কয়েকজন পুর নাগরিক অভিযোগ করেন, তাঁদের কাছে উপ পৌর প্রশাসকের সই করা কাগজ থাকা সত্ত্বেও তাঁদের টিকা দেওয়া হয়নি। এমনকী উল্টে সিভিক ভলান্টিয়াররা তাঁদের হেনস্থাও করেন বলে অভিযোগ।
উত্তরপাড়া পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীতে জায়গা পেয়েছেন পিনাকি ধামালি। পিনাকিবাবু সেখানকার প্রাক্তন পুরপ্রধান। তাঁকে উপ পৌর প্রশাসক করা হয়েছে। তাঁর এলাকা থেকে যাঁরা তাঁর সুপারিশ নিয়ে ভ্যাকসিন নিতে আসেন তাঁদের টিকাকরণের সময়েই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় বলে দাবি। সেই সময় কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীদের মারধর ও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। উত্তরপাড়া পুরসভার পাবলিক হেল্থ অফিসার জয়িতা চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, তাঁকে এবং তাঁর সহকর্মীদের মারধর ও হেনস্থা করা হয়। প্রথমে ঠিক ছিল এক একটি ওয়ার্ড থেকে সুপারিশের ১৫ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কিন্তু নাম রেজিষ্ট্রেশন না করিয়ে অনেকে একসঙ্গে চলে আসায় সমস্যা শুরু হয়। সেই কথা বলতেই হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে যদিও পিনাকি ধামালি কিছু বলতে চাননি।
গোটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি মুখপাত্র প্রণয় রায় বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার ভ্যাকসিন পাঠাচ্ছে। আর পশ্চিমবঙ্গে সেই ভ্যাকসিন নিয়ে স্বজনপোষণ চলছে, দুর্নীতি চলছে। এই কথা আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি। এতদিন আমরা বলছিলাম যে কাউন্সিলর কুপন দিচ্ছেন না, কাউন্সিলরের কুপন ছাড়া ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না, বিজেপি কর্মীরা ভ্যাকসিন পাচ্ছেন না। এখন দেখা যাচ্ছে তৃণমূলেরই অপর এক নেতার সই করা কুপন নিয়ে গেলেও তাঁদের ভ্যাকসিন দেওয়া হল না। কারণ যেহেতু সেই নেতা দিলীপ যাদবের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর। শুধু তাই নয়, এরপরে স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর আক্রমণও করা হল।'
উত্তরপাড়ার পুর প্রশাসক দিলীপ যাদব বলেন, 'যতটা আমরা পেরেছি, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই মানুষকে টিকা দিয়েছি। সুষ্ঠুভাবে ভ্যাকসিন দেওয়ার চেষ্টাকে কোনওভাবে যদি ব্যাহত করা হয় তাহলে সেটা পুরসভা মানবে না। কারও না জানা থাকলে তার জন্য পুরসভার আধিকারকরা আছেন, আমরা আছি।' তিনি জানান, দু একজন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থা করেছেন। তিনি চান পুলিশে অভিযোগ করা হোক এবং তাঁরাই তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।