সৌভিক মজুমদার, কলকাতা :  শিবপুর, ডালখোলার পর রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়িয়েছে হুগলির রিষড়াতেও। এবার তিন জায়গার অশান্তির ঘটনায়, রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট । হাওড়া, হুগলি, ডালখোলায় হিংসার ঘটনায় রাজ্যের রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট। ৫ এপ্রিলের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে রাজ্যকে। সিসি ক্যামেরা ও ভিডিও ফুটেজও আদালতে পেশের নির্দেশ দিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। 



কী জানতে চাইল আদালত 
শিবপুরের অশান্তি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম।  পুলিশের অনুমতি নিয়ে মিছিল হয়েছিল, ৩০ মার্চের ঘটনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না' হাওড়া-সংঘর্ষ মামলার শুনানিতে সওয়াল করেন আবেদনকারীর আইনজীবী। 'বর্তমানে কি পরিস্থিতি? পুলিশ কেন অনুমান করতে পারেনি? অভিযোগ দায়ের হয়েছে? ঘটনায় কেউ কি গ্রেফতার হয়েছে?' রাজ্যকে প্রশ্ন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির। 

 অ্যাডভোকেট জেনারেল কী জানালেন
আদালতে অ্যাডভোকেট জেনারেলের দাবি, 'শান্তিপূর্ণ মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মিছিল শুরুর ৩০ মিনিটের মধ্যেই মিছিলে যোগদানকারীরা হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। এখন পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ, অভিযোগ দায়ের হয়েছে, গ্রেফতার ৩৬'
অ্যাডভোকেট জেনারেলের এই যুক্তির পরই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, 'গতবারও এই ঘটনা ঘটেছিল, আগে অনুমান করা উচিত ছিল, পুলিশ অনুমতি দিল কেন?' আদালতে এনআইএ তদন্ত ও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি করেন মামলাকারীর আইনজীবী।  

'শিশুদের দিয়ে হিংসা'
 অন্যদিকে হাওড়ার অশান্তির ঘটনায় চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলল জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। শিশুদের দিয়ে হিংসা ছড়ানো হয়। পাথর ছোড়ায় ব্যবহার করা হয় শিশুদের। চাঞ্চল্যকর অভিযোগ জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের। এই অভিযোগ জানিয়ে হাওড়ার পুলিশ কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠীকে চিঠি দিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান। কী পদক্ষেপ পুলিশের, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট তলব করেছে NCPCR। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে 
ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিলজলা, মালদার রেশ কাটতে না কাটতে ফের সক্রিয় জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন।

বৃহস্পতিবার রামনবমীর অশান্তির পর তাঁর আঁচ এসে পড়েছিল শুক্রবারও! তবে শনিবার থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে হাওড়ার শিবপুর। নতুন করে অশান্তির খবর না থাকলেও, এখনও কাটেনি থমথমে ভাব! এরইমাঝে রবিবার শিবপুর যাওয়ার পথে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে পুলিশের বাধা দেওয়া নিয়ে তপ্ত হয়ে ওঠে রাজনীতি। অন্যদিকে শিবপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ও NIA তদন্তের দাবিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। এসবের মধ্যেই শিবপুরের সাধারণ মানুষ চাইছে, রাজনীতি থেমে পুরোপুরি স্বাভাবিক হোক তাঁদের এলাকা।