সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর জখম হয় এক হনুমান। তবে অবলা প্রাণীর সেবায় কোনও ত্রুটি রাখলেন না এলাকাবাসীরা। হুগলি জেলার শেওড়াফুলি এলাকার ঘটনা। আহত হনুমানের সেবাশুশ্রুষা করে তাকে ফের প্রকৃতির কোলে ফিরিয়ে দিলেন এলাকার মানুষজন।


হুগলি জেলার শেওড়াফুলি এলাকায় গত তিন-চার দিন ধরে হনুমানের একটি দল ঘুরে বেড়াচ্ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি তারা মূলত খাবারের খোঁজেই ঘুরছিল লোকালয়ে। আজ সোমবার, শেওড়াফুলির বিধানপল্লি ঘোরাঘুরি করার সময়েই বিদ্যুতের তারে পড়ে যায় দলের একটি হনুমান। স্বভাবতই সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে। প্রচণ্ড শব্দ করে রাস্তায় ছিটকে পড়ে প্রাণীটি। হনুমানের যন্ত্রণাকাতর অবস্থায় ছটফট করতে থাকে। যে আওয়াজ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা এসে দেখেন রাস্তায় পড়ে ছটফট করছে আহত হনুমানটি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে সেবার কাজে হাত লাগান প্রত্যেকে। 


স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কেউ কেউ তাকে গরম দুধ খাওয়ান, তো কেউ তাকে জল কলা খেতে দেন। অবলা জীবের শুশ্রুষায় কোনও খামতি রাখেননি তাঁরা। ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে হাজির হন বৈদ্যবাটি পুরসভার দশ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর সুবীর ঘোষ। তিনি পৌঁছে তৎক্ষণাৎ টোটো ডেকে বিধানপল্লি এলাকার বাসিন্দাদেরই বলেন জখম প্রাণিটিকে পশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে। তাকে শ্রীরামপুরের মাহেশে পশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসার পরে অনেকটাই সুস্থ হয় হনুমানটি। 


হনুমানটি সুস্থ হয়ে উঠলে খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। তাঁরা এসে খাঁচা করে নিয়ে যায় হনুমানটিকে। বন দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার জেরে হনুমানটির কোনও শারীরিক সমস্যা হচ্ছে কি না তা তারা কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করে দেখবেন। তারপর হনুমানটি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি তাদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে, শেওড়াফুলি এলাকার সাধারণ মানুষকে। যেভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া হনুমানটিকে দ্রুত প্রাথমিক সুশ্রুষা তারা দিয়েছেন, তারও প্রশংসা করা হয়েছে।