সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর: করোনা (Corona) অতিমারির জন্য গত দু'বছর বন্ধ ছিল মাহেশে (Mahesh) জগন্নাথদেবের (Jagannath) রথযাত্রা (Rath Yatra)। এবার রথযাত্রা হবে মহা সমারোহে। আজ মাহেশে সাংবাদিক বৈঠক করে রথযাত্রার সময় নির্ঘণ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় মাহেশ জগন্নাথ ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে। শুধু তাই নয়, এবার ঐতিহাসিক এই রথযাত্রায় আসছে ডিজিটাল (Digital) ছোঁয়া। 


রথযাত্রা প্রসঙ্গ


এবছর ৬২৬ বছরে পড়ল মাহেশের রথযাত্রা। সাধক ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী এই রথ যাত্রার সূচনা করেছিলেন। স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে গঙ্গায় ভেসে আসা নিম কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল জগন্নাথ দেবকে। সেই থেকেই চলে আসছে ঐতিহ্যবাহী মাহেশের এই রথ। বহু ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে এই রথযাত্রার সঙ্গে। শ্রীচৈতন্যদেব রামকৃষ্ণ থেকে শুরু করে বহু মনীষীর আগমন ঘটেছে এখানে। বঙ্কিমচন্দ্রের রাধারানী গল্প মাহেশের রথের মেলার উল্লেখ আছে। ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীন এই রথযাত্রা উৎসব পুরীর পরেই নাম আছে মাহেশের। এত বছর পরেও আজও একই রকম ভাবে ভক্তদের উন্মাদনা দেখা যায়। রথযাত্রার সাক্ষী হতে হাজার হাজার মানুষ রাজপথে ভিড় জমান। যদিও করোনার প্রকোপে গত দুবছর বন্ধ ছিল এই রথযাত্রা উৎসব।


মন্দির সংস্কার


সম্প্রতি রাজ্য সরকারের পর্যটন দপ্তরের পক্ষ থেকে মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের সংস্কার থেকে শুরু করে বেশ কিছু কাজ করা হয়েছে। মহেশকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইমতো এগিয়েছে কাজ। মন্দিরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে নাটমন্দির এবং সহ দেবতাদের মন্দির তৈরি হয়েছে। জগন্নাথ মন্দিরের কাছে তোরণ তৈরি করা হয়েছে। সরকারি টাকায় জগন্নাথ মন্দিরের সংস্কারের কাজ চলছে বলে জানান হয়েছে। 


আরও পড়ুন, চন্দনে স্নান করার পরই জ্বর জগন্নাথের, চাক্ষুষ করতে ভক্তদের ভিড় মাহেশে 


ভোগ বিতর্ক


তবে ভোগ নিবেদনের মূল্য নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সাধারণ ভোগের জন্য একজন ভক্তকে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। আর তাতেই প্রশ্ন উঠছে। বলা হয়েছে, অনেকের সাধ থাকলেও সাধ্যে কুলোবে কি না। জগন্নাথ মন্দিরের দেওয়ালে সারা বছরের পুজোর বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের একটি খরচের তালিকাও টাঙানো হয়েছে। তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জগন্নাথ মন্দিরের ট্রাস্টিবোর্ডের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী যদিও বলেছেন এতে কোনও অসঙ্গতি নেই। তাঁর দাবি পুরীর মন্দির থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্দিরে এই ধরনের পুজোর খরচ ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের খরচের তালিকা দেওয়া হয়। অন্যান্য জায়গার তুলনায় অনেকটাই কম বলেও দাবি পিয়াল অধিকারীর। 


ডিজিটাল ব্যবস্থা


এবার থেকে কেউ পুজো দেওয়ার জন্য টাকা দেবেন মনে করলে অনলাইনে করতে পারেন। তাঁদের ভোগ কুরিয়ার করে দেওয়া হবে বলে জানান পিয়াল অধিকারী।