সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর: 'কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা', এই প্রবাদটি আমরা কমবেশি সকলেই জানি। এবার সেই কায়দায় টাকা দিয়ে টাকা তুলল প্রতারক। অনলাইন প্রতারণার জালে বর্তমানে জেরবার রাজ্য। প্রতিদিনই নিত্যনতুন কৌশলে প্রতারিত হচ্ছে একাধিক। প্রলোভন দিয়ে হ্যাকিং অ্যাপ ডাউন লোড করিয়ে টাকা হাতানোর কায়দা পুরোনো হচ্ছে,তাই নতুন কৌশল নিচ্ছে প্রতারক।
চুঁচুড়া বুড়ো শিবতলার বাসিন্দা বৃদ্ধ রমেন্দ্র নারায়ন চক্রবর্তীর পর এবার শ্রীরামপুরের এক মহিলা অনলাইন প্রতারণার শিকার হলেন। শ্রীরামপুর শিরিষতলায় মুক্তা মুখোপাধ্যায়ের ওষুধের দোকান রয়েছে। তাঁর ব্যবসার কাজে একটি জনপ্রিয় অনলাইন টাকা লেনদেনের অ্যাপ ব্যবহার করেন তিনি। গতকাল সেই অ্যাপের নাম করে ফোন করা হয় তাঁকে। মুক্তা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে তাঁকে বলা হয় তিনি ১২০০ টাকা ক্যাশব্যাক পেয়েছেন।
মুক্তা দেবীর মোবাইলে একটি মেসেজও আসে। সেখানে বলা হয় তিনি ওই টাকা পেতে কেন কিউ আর কোড স্ক্যান কেন করাচ্ছেন না? ফোন করে তাঁকে একই কথা বলা হয়। এমনকী বিশ্বাস আদায় করতে ওই অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনে সারে চার হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়ে মেসেজও পাঠায় প্রতারক। এমনকী পুলিশের ভয় দেখালে এখনই তার অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা সরিয়ে নেওয়া হবে, এমন হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ মুক্তা দেবীর।
এরপর পাঠানো চার হাজার টাকা ফেরত দিতে বলা হয়। যদিও মুক্তাদেবী বলেন, তাঁর দোকানে এসে টাকা নিয়ে যেতে। সেই সময় প্রতারক জানায় করোনার সময় দোকানে যাওয়া যাবে না। এরপরই আচমকা সাত হাজার টাকা সরিয়ে নেয় প্রতারক। টাকা তোলার মেসেজ আসতেই ভয় পেয়ে যান মুক্তা দেবী। টাকা ফেরাতে এনি ডেস্ক অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়। তারপরে কয়েক মিনিট কথা বলতে বলতেই ৯৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক।
এই ঘটনার পরই শ্রীরামপুর থানা ও চন্দননগর পুলিশের সাইবার সেলে অভিযোগ জানান মুক্তা মুখোপাধ্যায়। তিনি বুঝতেও পারেননি তার কাছে ডেবিট বা ক্রেডিট এর যে মেসেজ ঢুকছিল তা ভুয়ো কিনা। প্রতিদিনই অনলাইন প্রতারনার নতুন নতুন কৌশল বের করছে প্রতারকরা। কখনও ভয় দেখিয়ে কখনও ভুল বুঝিয়ে কখনো প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে চলেছে। আর সেই ফাঁদে পা দিচ্ছেন সাধারণ মানুষও।