সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: নাবালিকা মেয়ের (adolescent girl) সঙ্গে যুবকের (youth) সম্পর্ক (affair) মেনে নিতে পারেননি। অভিযোগ, সেই আক্রোশ (grievance) থেকেই যুবককে ধারাল অস্ত্র (sharp weapon) দিয়ে কোপালেন কিশোরীর মা-বাবা! যুবকের মৃতদেহ রাস্তার উপর থেকে উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই বেপাত্তা অভিযুক্তরা। মারধরে জখম হয়েই মৃত্যু? খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে অবশ্য হুগলির (hooghly) চুঁচুড়ার (chinsurah) এই ঘটনায় হরিদেবপুর-কাণ্ডের ছায়া দেখছেন তদন্তকারীরা। 


কী ঘটেছিল?
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, নাবালিকা মেয়ের প্রেমে আপত্তি থাকায় তার প্রেমিককে ধারাল অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়েছেন কিশোরীর মা-বাবাই। পরে রাস্তার ধার থেকে যুবকের নিথর দেহ উদ্ধার হলে হইচই পড়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ২ বছর ধরে, পাড়ারই এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে চুঁচুড়া কালীতলার বাসিন্দা রোহিত রাম নামে বছর কুড়ির এই যুবকের। পড়শিদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, কয়েকবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়েও গেছে দু’জনে। শেষ বার সেপ্টেম্বর মাসে বিহারে পালান রোহিত ও সেই নাবালিকা। ফিরিয়ে আনার পর হোমে ঠাঁই হয় কিশোরীর।
অভিযোগ এর পর থেকে মেয়ের প্রেমিককে পাড়ায় ঢুকতে নিষেধ করে কিশোরীর পরিবার। কিন্তু সম্ভবত সেই নিষেধাজ্ঞা তিনি মানেননি। সমস্ত  কিছু অগ্রাহ্য করে পাড়ারই এক আটাকলে কাজ নিয়েছিলেন যুবক। শুক্রবার রাতে তাঁকে পাড়ায় দেখতে পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কিশোরীর মা-বাবা। অভিযোগ, বাঁশ ও কাটারি দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে শুরু করেন। সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিও-ও ভাইরাল হয়েছে। একাংশের দাবি, সেটি হামলার মুহূর্তের ভিডিও। তাতে দেখা যাচ্ছে, পাড়ারই এক বাসিন্দা, যুবককে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এর খানিকক্ষণ পরই, রাস্তার ধারে রোহিতকে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্‍সকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। যুবকের মা-র দাবি ফুলকুমারী রামের বক্তব্য, 'মেয়েটার মা-বাবাই ওঁকে মেরেছে।' 


কী বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা?
ঘটনায় হইচই পড়ে যায় এলাকায়। সোমনাথ প্রামানিক নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, যুবককে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে অভিযুক্তরা বলতে শুরু করেন, 'এখানে আবার এসেছিস!' এর পরই কাটারি, বাঁশ দিয়ে মারধর শুরু হয়। রোহিতের এক আত্মীয়ের দাবি, 'যেহেতু ওর মেয়ের সঙ্গে মেলামেশা, তাই হোমে পাঠিয়েছিল। বলেছিলাম ১৮ বছর হলে বিয়ে দেব।' ঘটনাটি সম্পর্কে রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ তাঁরা জানতে পারেন বলে আরও দাবি তাঁর। এদিকে যাঁদের নিয়ে এত হইচই, নাবালিকার মা-বাবা অবশ্য ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে এখন সে সবই খতিয়ে দেখছে পুলিশ।


আরও পড়ুন:'খুনের ব্লু-প্রিন্ট বান্ধবীর মায়ের, দেহ লোপাটের ছক বাবার'