সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দননগর: ভোটের (Municipality Vote) দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে, প্রার্থী তালিকাও প্রকাশিত। এই আবহে ভাগাড় ইস্যুতে সরগরম চন্দননগর কর্পোরেশনের (Chandannagar Corporation) রাজনীতি। দূষণের অভিযোগ তুলে আট নম্বর ওয়ার্ড থেকে ভাগাড় সরানোর দাবিতে সরব হয়েছে বিজেপি। গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে সিপিএম (CPM)। তৃণমূলের পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর আশ্বাস, দেড় বছরের মধ্যে মিটে যাবে সমস্যা
২২ জানুয়ারি চন্দননগর-সহ রাজ্যের ৪ কর্পোরেশনে নির্বাচন। ভোটের দিন ঘোষণা হতেই সরগরম হুগলির (Hoogly) চন্দননগর কর্পোরেশনের রাজনীতি।গঙ্গাপাড়ে ঐতিহ্যের শহর চন্দননগর, একসময় যা ছিল ফরাসি উপনিবেশ। আর সেই শহরের বুক দখল করে রয়েছে পাহাড় প্রমাণ এই জঞ্জালের স্তূপ! চন্দননগর কর্পোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কলুপুকুর এলাকা। সেখানেই রয়েছে এই ভাগাড়। চন্দননগর পুর এলাকার সমস্ত অবর্জনা এখানেই ফেলা হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ৮,৯,১০ ও ৩৩, এই ৪টি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ। চন্দননগরের বাসিন্দা সুদীপ্তা রায়ের কথায়, যখন গন্ধ বেরোয় খাবার ছেড়ে উঠে যেতে হয়। বাচ্চা আছে। এখানকার জন্য রোগ আরও ছড়াবে। রাস্তা দিয়ে যাওয়া যায় না। নোংরা নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় পড়ে।
চন্দননগরের আরেক বাসিন্দা মিনতি ধাড়ার কথায়, গন্ধে থাকা যায় না। ঝড় জল হলে কাগজে ভরে যায়। নোংরা ঘরে ঢুকে যায়। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ সামনে আসতেই সুর চড়িয়েছে বিরোধী শিবির। ফের ভাগাড় অন্যত্র সরানোর দাবি উঠছে।
হুগলি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি সুরেশ সাউয়ের কথায়, মানুষের দাবি ভাগাড় সরানো হোক। আমরাও বলেছি বারবার। তৃণমূলের কী মধু আছে জানি না, ১০ বছরের বেশি হয়ে গেল। এখান থেকে ভাগাড় সরাচ্ছে না।
চন্দননগর পুরনিগম সিপিএম কর্মী ও প্রাক্তন কাউন্সিলর গোপাল দাসের কথায়, যখন বামপন্থী পুরবোর্ড ছিল, তখন ভাগাড় থেকে সম্পদ তৈরি করেছে। সার কারখানা করেছিল। পার্ক করেছিল। আবার ভাগাড়কে ভাগাড়ে পরিণত করেছে। দুর্গন্ধ। জঞ্জালের পাহাড়। মানুষকে নাজেহাল হতে হচ্ছে।
গত পুরভোটে ৩৩টির মধ্যে ২৩টি ওয়ার্ড জিতে চন্দননগর কর্পোরেশন দখল করেছিল তৃণমূল। বোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর পর প্রশাসক বসিয়ে কাজ চলছে। কর্তৃপক্ষের আশ্বাস শিগগিরই মিটে যাবে ভাগাড় সমস্যা।
চন্দননগর কর্পোরেশনের তৃণমূল নেতা ও প্রশাসক রাম চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বিরোধীদের কথায় মানুষ কর্ণপাত করবে না। বছর দেড়েকের মধ্যে এই জটিলতা থাকবে না। শিফটিং করছি। জমি চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। আরও জমি সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। অপচনশীল জৈব পদার্থ সেখানে ফেলব। পচনশীল দ্রব্য এখান থেকে এজেন্সির মাধ্যমে নিয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত সরবে ভাগাড়? না কি ভোট রাজনীতির কেন্দ্র হিসেবেই থেকে যাবে? উত্তর দেবে সময়।