বাপন সাঁতরা, আরামবাগ : রাজনৈতিক হিংসায় রক্তক্ষরণ অব্যাহত রাজ্যে। ভোট পরবর্তী হিংসায় এবার শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে প্রাণ গেল এক তৃণমূল কর্মীর। আহত আরও দুই তৃণমূল কর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে খানাকুলের কিশোরপুর পঞ্চায়েতের মহিষগোট এলাকায়। মৃত তৃণমূল কর্মীর নাম শেখ এক্রামূল আলি। ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে খানাকুলে।


কী ঘটনা ?


অভিযোগ, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই দ্বন্দ্ব শুরু হয় খানাকুল ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ শেখ আলি হোসেন বনাম কিশোরপুর ২ নং পঞ্চায়েতের বর্তমান সদস্য জুম্মাত আলির। সেই দ্বন্দ্ব থেকেই বৃহস্পতিবার দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে খানাকুলের মহিষগোট এলাকায়। চেহারা নেয় সংঘর্ষের। মূলত ক্ষমতা দখলকে ঘিরে একে অপরের দিকে লাঠি ও বাঁশ নিয়ে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠে উভয়পক্ষের বিরুদ্ধে। সংঘর্ষে আহত হয় উভয়পক্ষের তিন জন। পঞ্চায়েত সদস্য জুম্মাত আলির দুই অনুগামীকে খানাকুল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে মারধরে অবস্থার অবনতি হয় আলি হোসেনের ভাই এক্রামূলের। তাঁকে আরামবাগের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে সেখানেই চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।


পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা আলি হোসেনের অভিযোগ, মারধরের জেরেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর ভাই তথা তৃণমূল কর্মী এক্রামূল আলির। এখন তাঁর দলে পদ না থাকায় জুম্মাত আলির লোকজন এলাকা দখল নেওয়ার জন্য হামলা চালায়।


যদিও পাল্টা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য জুম্মাত আলি ও তাঁর অনুগামীদের অভিযোগ, এলাকার দখল নেওয়ার জন্য তাঁদের উপর চড়াও হয়। তাঁদের মারধর করার পাশাপাশি এক কর্মীর দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে।


দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে খানাকুলের কিশোরপুর এলাকায়। যদিও গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব মানতে নারাজ খানাকুল ১ নং ব্লক তৃণমূল সভাপতি দীপেন মাইতি। দুই গোষ্ঠীর লোকজন তৃণমূলের কর্মী বলে স্বীকার করলেও এই ঘটনা পারিবারিক বলে দাবি করেন তিনি।


তবে ঘটনার জেরে দফায় দফায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে খানাকুল থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। আটক করা হয়েছে দুই তৃণমূল কর্মীকে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।


তবে ঘটনাকে ঘিরে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষের মন্তব্য, টাকার ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে গন্ডগোল। তার জেরেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।