সুনীত হালদার, উলুবেড়িয়া: চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে উলুবেড়িয়া শহরে ভ্যান চালিয়ে শয্যাশায়ী বাবাকে নিয়ে সাহায্যের আশায় ঘুরছে ১১বছরের ছোট্ট নাবালিকা। ঘটনা জানাজানি হতেই পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও।


ভ্যানে শুয়ে অসুস্থ বাবা। ভাল করে পা টাও পাচ্ছে না প্যাডেলে। সাহায্যের আশায় ভ্যান চালিয়ে ঘুরছে বছর ১১-এর মেয়ে!


স্থানীয় সূত্রে খবর, উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা বছরের ৫০ এর এই ব্যক্তি ২০ বছর ধরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে শয্যাশায়ী। বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। পেশায় শ্রমিক সংসারের উপার্জনের একমাত্র ভরসা ছিলেন তিনি। অসুস্থতার কারণে সংসারে দেখা দিয়েছে অভাব অনটন। ফলে যে বয়সে পড়াশোনা নিয়ে থাকার কথা সেই বয়সেই অসুস্থ বাবাকে নিয়ে চিকিৎসার খরচ জোগাতে রাস্তায় নেমেছে একমাত্র মেয়ে। উলুবেড়িয়ার বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে মাকে সঙ্গে নিয়ে বাবার চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাইছে ছোট্ট মেয়েটি। কখনও কোথাও সাহায্য মিলছে, আবার কোনওদিন সারাদিন খাবারটুকুও জোটে না। এটাই প্রতিদিনের রুটিন এই ১১ বছরের নাবালিকার। স্থানীয় একটি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে সে। 


মেয়েটি জানিয়েছে, ‘আমার দাদা, ভাই, দিদি কেউ নেই। বাবা কিছু করতে পারে না। সকলের সাহায্যেই চলে। সারা দিন ভ্যান চালিয়ে সন্ধেয় বাড়ি ফিরে হাত-পায়ে খুব যন্ত্রণা করে। বই নিয়েও বসি। মা ডাকলে শুয়ে থাকা বাবার কাছে যাই।’


এই ঘটনা জানাজানি পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন উলুবেড়িয়া ১ নম্বরের বিডিও নীলাদ্রিশেখর দে। সাহায্যেরও আশ্বাস দেন তিনি। বিডিও বলেছেন, ‘মেয়েটির পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হবে। পরিবারের পাশে আছি। চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।’


অনেক সময়ই দেখা যায় সন্তানরা বাবা-মার দায়িত্ব নিচ্ছেন না। কিন্তু এই নাবালিকা ছোট্ট বয়সেই সংসারের দায়িত্ব তুলে নিয়েছে নিজের কাঁধে। বিডিও যদি আশ্বাসমতো মেয়েটি ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়ান, তাহলে তাদের উপকার হবে, কষ্ট দূর হবে।