সুনীত হালদার, পার্থপ্রতিম ঘোষ, হাওড়া: পারিবারিক বিবাদের জেরে শাশুড়ি, ভাসুর, জা ও ভাসুরের কিশোরী কন্যাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল গৃহবধূর বিরুদ্ধে। গতকাল রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়া থানার এমসি ঘোষ লেনে। খুনের অভিযোগে গ্রেফতার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী পল্লবী ঘোষ। পলাতক তাঁর স্বামী দেবরাজ। 


পুলিশের দাবি, জেরায় পল্লবী জানিয়েছেন, গতকাল রাতে শৌচাগারে কল খুলে রাখা নিয়ে জা রেখা ও ভাসুর দেবাশিসের সঙ্গে অশান্তি শুরু হয়। নিজের ৭ বছরের ছেলেকে দোতলার ঘরে বন্ধ করে কাটারি নিয়ে নীচে নেমে জা-ভাসুরকে কোপাতে শুরু করেন পল্লবী। বাধা দিলে শাশুড়ি মাধবী ও জায়ের মেয়ে ১৩ বছরের তিয়াসাকে এলোপাথাড়ি কোপান। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৪ জনের। বাঁচাতে গিয়ে জখম হন এক আত্মীয়। শুধুই পারিবারিক বিবাদ? নাকি সম্পত্তি বা অন্য কোনও আক্রোশে খুন? খতিয়ে দেখছে হাওড়া থানার পুলিশ।


পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় পল্লবীর দাবি, তাঁর স্বামী বাড়ি ছিলেন না। একাই খুন করেছেন ৪ জনকে। রেগে গেলে যা ইচ্ছে তাই করতে পারি। এমনকি নিজেকেও মারতে পারি, পুলিশের কাছে দাবি পল্লবীর। ধৃত মহিলার আচরণ স্বাভাবিক নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। 


কিন্তু কী করে ঘটে গেল নৃশংস এই ঘটনা? ধৃতকে জেরা করে পুলিশের দাবি, বুধবার রাত ১০.১৫ নাগাদ বাড়ির শৌচাগারে কল থেকে জল পড়া নিয়ে ছোট বউ পল্লবীর সঙ্গে ভাসুর দেবাশিস ঘোষ ও জা রেখা ঘোষের বিবাদ বাধে। এর মিনিট পনেরো পরেই, বাড়ির দোতলার ঘরে নিজের ৭ বছরের সন্তানকে বাইরে থেকে আটকে দেন পল্লবী। 


পুলিশের দাবি, এরপরই একটি কাটারি নিয়ে একতলায় চলে আসেন পল্লবী। প্রথমে ঝাপিয়ে পড়েন ভাসুর ও জা-র ওপর। এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকেন দু’জনকে। এই দৃশ্য দেখে ছুটে আসে দেবাশিস-রেখার ১৩ বছরের মেয়ে। কিন্তু পল্লবীর থেকে রেহাই মেলেনি! এমনকি শাশুড়ি বাঁচাতে এলে তাঁকেও এলোপাথাড়ি কোপানো হয়। ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়!


এরপর পুলিশ এসে অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেফতার করে। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই পলাতক বাড়ির ছোট ছেলে ও ধৃত পল্লবীর স্বামী দেবরাজ ঘোষ। পুলিশের দাবি, জেরায় পল্লবী জানিয়েছেন, তিনি একাই চারজনকে খুন করেছেন। ঘটনার সময় স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। তবে তাঁর দাবি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পারিবারিক অশান্তির জেরেই এই ঘটনা, না নেপথ্যে কোনও পারিবারিক বিবাদ রয়েছে, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।


আরও পড়ুন- জলের ট্যাঙ্কে ফেলে শিশুকে খুন! গ্রেফতার মৃত একরত্তির জেঠিমা