সত্যজিৎ বৈদ্য, সৌমিত্র রায়, ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, হাওড়া: বালিতে তৃণমূল নেতাকে গুলি করল কে? দলেই ২ তত্ত্ব! হামলায় হাত থাকতে পারে বিজেপির, দাবি যুব তৃণমূল নেতার।'নিজে করল, না কেউ করেছে, তা দেখার কথা পুলিশের', ভিন্ন সুরে দাবি ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক কল্যাণ ঘোষের।
হাওড়ায় বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান। রাস্তার মাঝে ধীরেসুস্থে এসে গুলি চালিয়ে গেল আততায়ী। গুলিতে জখম পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গীও। এখনও অধরা আততায়ী।মোটরবাইকের পিছনে বসে আসছিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান। উল্টোদিক থেকে ধীরেসুস্থে হেঁটে যাচ্ছিল আততায়ী তৃণমূল নেতা সামনে আসতেই একেবারে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি!
রাত তখন সাড়ে ১০টা।রাস্তাঘাটে ভালই লোকজনের যাতায়াত। তারই মধ্যে হাড়হিম করা ঘটনা ঘটে গেল হাওড়ার বালিতে। যে দেবব্রত মণ্ডল ওরফে বাবু মণ্ডল গুলিবিদ্ধ হয়েছেন,তিনি তৃণমূল পরিচালিত সাঁপুইপাড়া-বসুকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। পেশায় ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী। পরিবারের দাবি, রাতে এক তৃণমূল কর্মীর মোটরবাইকে বসে বিয়েবাড়ি থেকে ফিরছিলেন দেবব্রত মণ্ডল ওরফে বাবু মণ্ডল। CCTV ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, সেই সময় তৃণমূল প্রধানকে একেবারে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালায় আততায়ী।
তৃণমূল নেতার পরিবার ও প্রত্য়ক্ষদর্শীদের দাবি, হামলাকারী বাসু চৌধুরী।পেশায় সেও ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর মোটরবাইক থেকে পড়ে যান তৃণমূল নেতা। বাইক নিয়ে চলে যান তাঁর সহকর্মী। রাস্তায় পড়ে থাকা অবস্থাতেই আততায়ীকে ধরার চেষ্টা করেন তৃণমূল নেতা। কিন্তু তাঁকে উল্টে লাথি মারে আততায়ী।তারপর নিশ্চিন্তে হেঁটে চলে যায় হামলাকারী।
তৃণমূল কর্মী সৌমেন রায় : আমরাও একসঙ্গে ছিলাম বিয়ে বাড়িতে। সবাই একসঙ্গে বেরোচ্ছি। উনি একটু গাড়িতে এগিয়ে গেছেন। আরেকজনের গাড়ির পিছনে ছিলেন। একটু শুধু এগিয়েছেন।
প্রশ্ন: কতটা হবে?
তৃণমূল কর্মী সৌমেন রায় : খুব বেশি হলে ১০-১২ মিটার। হঠাৎ করে দেখলাম একটা অ্যাটাক ওঁর উপরে নেমে এল।
প্রশ্ন: যে গুলি চালাচ্ছিল, সে কি পায়ে হেঁটে এসেছিল?
তৃণমূল কর্মী সৌমেন রায় : পায়ে হেঁটেই এসেছিল।
প্রশ্ন: যে ব্যক্তি গুলি চালিয়েছে, তার নাম?
তৃণমূল কর্মী সৌমেন রায় : তার নাম হচ্ছে বাসু, যেটুকু যা শুনেছি। সমাজে দুষ্কৃতী হিসেবে পরিচিত।
মূল অভিযুক্ত যে বাসু চৌধুরীর নাম উঠে আসছে, যার বিরুদ্ধে ২০১২ সালেও দেবব্রত মণ্ডলের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল। সেবার পার্টি অফিসে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল সে।সেই ঘটনায় গ্রেফতার হয়ে জেলও খাটে অভিযুক্ত। ১৩ বছর পর, সেই তাঁর বিরুদ্ধে ফের হামলার অভিযোগ উঠল। মূল অভিযুক্ত বাসু চৌধুরীর মা লিলি চৌধুরী বলেন,' পরশু শেষ ছেলেকে দেখেছেন। তারপর দেখা পাননি। ছেলে কী করে বলে না। ভাড়ার টাকায় সংসার চালান। বাসুর বাবা শয্যাসায়ী, ওকে দেখতেই সময় চলে যায়। ছেলের সঙ্গে বেশি কথা বলে না।'ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আততায়ীকে ধরতে পারেনি পুলিশ।
হাওড়া, পুলিশ কমিশনার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠী : সাঁপুইপাড়ার গ্রাম প্রধান ওঁর উপর একটা গুলি চলেছে। তদন্ত করে যারা এর মধ্যে যুক্ত তাদের ধরে বের করব।
প্রশ্ন: কজনের গুলি লেগেছে?
হাওড়া, পুলিশ কমিশনার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠী : ২ জনের গুলি লেগেছে।
SSKM-এর ট্রমা কেয়ারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতা।