কলকাতা: হাওড়া পুরসভা থেকে বালিকে (Howrah Municipality Amendment Bill) আলাদা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আগেই। এ বার তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠল বাংলায়। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে (Jagdeep Dhankhar) নিয়ে শাসক-বিরোধী দু’তরফে দু’রকম দাবি উঠছে। কিন্তু রাজ্যপাল বা রাজ্য সরকার, কাউকেই বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না বলে এ বার জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)।


রাজ্যপাল বিলে সই করে দিয়েছেন বলে আগেই জানিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু রাজ্য বিধানসভার প্রধান বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, এমন কোনও বিলেই সই করেননি রাজ্যপাল। তিনি নেজে তাঁকে সে কথা জানিয়েছেন। রাজ্যপাল ধনখড় আবার এ নিয়ে খোলসা করে কিছু বলেননি। বরং জানিয়েছেন বিষয়টি এখনও তাঁর বিবেচনাধীন।


এমন টানাপড়েনের মধ্যে শনিবার সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন অধীর। তিনি বলেন, “রাজ্যকে বিশ্বাস করব না রাজ্যপালকে, সমস্যাটাই তো এখানেই। রাজ্য একটা সংস্থা, রাজ্যের নির্বাচিত সরকার। আর রাজ্যপাল সাংবিধানিক প্রধান। উভয়ের কাছেই অনুরোধ, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং আসনের মর্যাদা রাখুন। রক্ষা করুন সংবিধানকে।” দু’রকম দাবি নিয়ে প্রশ্ন করলে অধীর বলেন, “ভারতের কোথাও নির্বাচন, উপনির্বাচনে এমন রক্তপাত, সন্ত্রাস হয় না। আসলে ভূ-ভারতে যা হয় না, এখানে তার সবকিছুই হয়।”


আরও পড়ুন: TMC vs BJP in West Bengal: কাঁথিতে সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে লক্ষ্য করে কটূক্তির অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে, হাতাহাতি, উত্তেজনা


তবে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি ধনখড়কেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, “বিজেপি-র হয়ে বিভ্রান্তি এবং জটিলতা তৈরিতে ভূমিকা রয়েছে রাজ্যপালের। কী ঘটেছে, যথাযথ সময়েই তা জানাবে রাজ্য। রাজ্যপাল সই করে না থাকলে, অবিলম্বে তা করে দেওয়া উচিত। অধিকারের বাইরে গিয়ে বিজেপি-র হয়ে এখানে উন্নয়নকে বিঘ্নিত করায় ভূমিকা রয়েছে ওঁর।” তবে শুভেন্দুর মতে, রাজ্যপাল সই করে না থাকলে, সে ক্ষেত্রে রাজ্যই ভুল তথ্য দিয়েছে। তাই আদালতের উচিত বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করা। কান টানলে মাথা আসবেই বলেও নিশ্চিত তিনি।


ক্ষমতায় এসে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে বালিকে (Bally) হাওড়া পুরসভার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।  তাতে বালি পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের পুনর্বিন্যাস ঘটিয়ে ১৬-য় নামিয়ে আনা হয়। সেই নিয়ে বালির বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ ছিলই। তার মধ্যেই সম্প্রতি হাওড়া পুরসভা থেকে বালিকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। কিন্তু তা নিয়ে রাজ্য এবং রাজ্যপালের অবস্থান ঘিরে টানাপড়েন শুরু হয়েছে।