পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : রবিবারই শালিমার স্টেশন থেকে হাতেনাতে পাকড়াও হয় শিশুপাচারকারী দম্পতি। আর তার সূত্র ধরেই এহার সামনে আসছে নানা রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা শিশু চুরি ও বিক্রের এক বিরাট চক্রের খোঁজ। রবিবারই ২ দিনের শিশুকে চুরি করে এনে এক দম্পতিকে বিক্রি করতে যাচ্ছিল অভিযুক্তরা। বুঝতে পারেনি এই জাল সিআইডি-র পাতা। গোয়েন্দাদের পাতা ফাঁদে পা দেয় অভিযুক্তরা। আর তারপরই শিশুচুরি করে পাচার করার সময় গ্রেফতার হয় তারা বিগার্ডেন থানা এলাকা থেকে। সিআইডি সূত্রের খবর, এই ২ নয়, এদের পিছনে রয়েছে এক বিরাট চক্র।


আসলে পুরো জালটাই পাতা হত প্রথম সোশ্যাল মিডিয়ায়। চাইল্ড অ্যাডপশন গ্রুপ নামে একটি  গ্রুপ  খোলা হয়েছিল ফেসবুকে। এর মাধ্যমে দত্তক চাওয়া দম্পতিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হত। কেউ বাচ্চা দত্তক নিতে ইচ্ছুক হলে জয়েনিং রিকোয়েস্ট করতে হত। সঙ্গে সঙ্গে মোটেই জয়েন করানো হত না তাঁদের, প্রথমে ভেরিফাই করা হত। তারা কি সত্যিই বাচ্চা অ্যাডপ্ট করতে চয়, নাকি পুলিশের লোক, খোঁজ নেওয়া হত। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা লোকজন খোঁজখবর নিত। তারপর গ্রুপে অ্যাড করানো হত। এর মধ্যে যারা বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করত, তাদের একটি  হোয়াটসগ্রুপে জয়েন করানো হত। তারপর তাদের সঙ্গে বাচ্চা লেনদেন সংক্রান্ত কথাবার্তা হত। নেওয়া হত মোটা টাকা। 


এই ফেসবুক গ্রুপটি কিছুদিন আগে সিআইডির নজরে আসে। তখন একটি এনজিওর সাহায্য নিয়ে এক দম্পতিকে কাজে লাগানো হয়। তারপর এই পাচারকারিদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে তারা । ৪ লাখ টাকায় বাচ্চার লেনদেনের চুক্তি পাকা হয়। সেই মোতাবেকই শালিমার স্টেশনে দুরন্ত এক্সপ্রেসে চেপে সম্ভবত বিহার থেকে বাচ্চা নিয়ে আসে পাচারকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, মানিক হালদার ও মুকুল সরকার নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের বাড়ি ডায়মন্ড পার্কে। পাড়ায় এসি মিস্ত্রি বলে পরিচিত ছিল মানিক। কিন্তু তারা যে এমন কাণ্ড ঘটিয়ে বেড়াত, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। মানিকের মায়ের দাবি, তিনি এ বিষয় কিচ্ছুটি জানতেন না। 


গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই দেখেছেন এই গ্রুপে ৩০০ জনেরও বেশি লোকজন আছেন। এদের ওপরে কে বড় মাথা, খোঁজ নিচ্ছে গোয়েন্দারা। আশঙ্কা করা হচ্ছে এদের জাল রাজ্যে রাজ্যে ছড়ানো।             


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে