সুনীত হালদার, হাওড়া: নিহত ছাত্রনেতা আনিস খানের (Anis Khan Case) ভাই সলমন খানকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া নিয়ে বিতর্ক। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেও আপত্তি জানায় সলমনের পরিবার। সিসিইউ-তে ভর্তি সলমন আদৌ সুস্থ নন, এই অবস্থায় তাঁকে কীভাবে ছাড়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সলমনের বাবা জালেম খান (Howrah News)।
সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট করতেই আনিসের ভাইকে খুনের চেষ্টা বলে অভিযোগ পরিবারের
রবিবার হাসপাতালে যান প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র এবং কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সিটি স্ক্যানে গুরুতর কিছু না পাওয়ায় সলমনকে আজই ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মেডিক্যাল বোর্ড। রাজনৈতিক চাপেই এই সিদ্ধান্ত, দাবি কংগ্রেসের।
এর আগে শুক্রবার রাতে নিজের বাড়িতেই আক্রান্ত হন আনিসের ভাই। তাঁকে কোপানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। আনিসের মৃত্যুর সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট করতেই তাঁর ভাইকে খুনের চেষ্টা বলে অভিযোগ তোলে পরিবার। হামলা-যোগ অস্বীকার করেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
রবিবার পর্যন্ত আনিস খানের ভাই সলমনের উপর হামলার ঘটনায় একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগ, শুক্রবার রাত সওয়া একটা নাগাদ, শৌচাগারে গিয়ে আক্রান্ত হন সলমন।
ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে এলোপাথাড়ি কোপ মারা হয়। আঘাত করা হয় মাথায় এবং হাতে-পায়ে।
এই ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনের নামে FIR দায়ের করে আমতা থানার পুলিশ। যদিও এখনও পর্যন্ত একজনও গ্রেফতার হননি। সেই থেকে উলুবেড়িয়া হাসপাতালের CCU-তে ভর্তি কছিলেন সলমন। তাঁর চিকিৎসায় দু'জন চিকিৎসকের মেডিক্যাল টিমও গঠন করা হয়।
সলমনকে সাত তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেওয়া নিয়ে বিতর্ক
রবিবার সকালে ছেলেকে দেখতে হাসপাতালে যান সলমনের বাবা। সঙ্গে ছিলেন আমতার কংগ্রেস নেতারা। তাঁরা গিয়ে জানতে পারেন, সলমনকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। এতেই বাধে নতুন বিতর্ক। প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক চাপের মুখে ওরকম জখম একজনকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাতারাতি ছুটি দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে আক্রান্তের পরিবার। আপত্তি জানিয়ে সলমনকে বাড়িও নিয়ে যাননি পরিজনরা।
রাজনৈতিক নেতারা তো বটেই, রাজনৈতিক চাপে রাতারাতি সলমনকে ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত বলে অভিযোগ স্থানীয়দেরও। সলমনের বাবা বলেন, "ডাক্তার চাপে পড়ে ছুটি দিয়ে দিয়েছেন। রাজনৈতিক চাপ রয়েছে। আমার চেলে সুস্থ নয়, আমি আরও ৩-৪ দিন রাখতে চাই। চাপ দিয়ে ছাড়ানো হয়েছে।"
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, "কেসটাকে হালকা করতে হবে, তাই হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ না করলে কেস হালকা হবে কী করে? পুলিশকে জানাতে হবে কোনও সিরিয়াস আঘাত নেই, জামিনযোগ্য সেকশন হবে, কোর্টে যাওয়ার আগেই জামিন পাবে।"
তবে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা অরূপ রায় বলেন, "হাসপাতাল যদি মনে করে সুস্থ আছেন, তাহলে ছেড়ে দিতে পারেন। অভিযোগ থাকলে সুপারকে বলুন, সস্তার রাজনীতি করছেন। বিধানসভা শূন্য হয়ে গিয়েছে।"