সুনীত হালদার, হাওড়া: দিন-রাত এক করে খেটে রোজগার করতেন। তাতেই চলত সংসার। কিন্তু দুর্ঘটনায় জখম হয়ে বসে গিয়েছেন বাড়িতে। তাতে দুনিয়ার চিন্তা ভর করেছে মাথায়। ভুগতে শুরু করেছিলেন। তার জেরে হাওড়ায় আত্যহত্যার চেষ্টা ব্যবসায়ীর। কোনও রকমে প্রাণরক্ষা।


হাওড়া (Howrah News) জেলার ডুমুরলা এলাকার (Dumurjala News) ঘটনা। সেখানকার এইচআইটি কোয়ার্টারে বসবাস অরূপ পালের। নিজের খাবারের দোকান চালান তিনি। তা থেকে যা আয় হয়, তা দিয়েই চলে সংসার। কিন্তু দিন পাঁচেক আগে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পা ভেঙে যায় তাঁর। তাতে কাজ ছেডে় বাড়িতে বসে যেতে হয়েছে। তাই সংসার চালানোর দুশ্চিন্তা তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল তাঁকে। সেই থেকেই চরম পদক্ষেপ করতে উদ্যত হন বলে জানা গিয়েছে।


শনিবার নিজের গলায় বঁটির কোপ মরে অরূবাবু আত্মঘাতী (Businessman triesto Commit Suicide) হতে যান বলে জানিয়েছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, স্বামী বাড়িতে বসে যাওয়ায় খাবারের দোকানের চালানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন অরূপবাবুর স্ত্রী। এ দিন ঘটনার সময় দোকানেই ছিলেন তিনি। কাজ সেরে বাড়ি ফিরে দেখেন যে, রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন স্বামী। পাশে পড়ে রয়েছে বাড়িতে সবজি কাটার কাজে ব্যবহৃত রক্তমাখা বঁটি।


আরও পড়ুন: Nadia News: কিছুতেই সরানো যাবে না ডাক্তারবাবুকে, নদিয়ায় হাসপাতাল সুপারের বদলির বিরুদ্ধে রাস্তায় মানুষ


পরিস্থিতি বুঝে উঠতে সময় নেননি অরূপবাবুর স্ত্রী। নিজের গলায় কোপ মেরে যে স্বামী আত্মঘাতী হতে গিয়েছিলেন, তা বুঝে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে পাড়া-প্রতিবেশিদের কাছে ছুটে যান তিনি। সাহায্য প্রার্থনা করেন সকলের। বিষয়টি জানতে পেরে তড়িঘড়ি ছুটে আসেন আশেপাশের লোকজন। ধরাধরি করে সকলে মিলে অরূপবাবুকে হাোড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। তাতেই প্রাণরক্ষা হয়েছে অরূপবাবুর। এই মুহূর্তে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।


প্রতিবেশিদের কাছ থেকে খবর পেয়ে এ দিন ঘটনাস্থলে ছুটে আসে চ্যাটার্জিহাট থানার পুলিশও। পুলিশের চেষ্টাতেই অরূপবাবুকে তড়িঘড়ি হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় বলে জানা গিয়েছে। বাড়ির মধ্যে থেকে রক্তমাখা বঁটিটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে মানসিক অবসাদ থেকেই অরূপবাবু এমন পদক্ষেপ করতে উদ্যন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।


অরূপবাবুর স্ত্রী জ্যোৎস্না পাল জানিয়েছেন, মদ্যপানের অভ্যাসও ছিল স্বামীর। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রায়শই অশান্তি লেগে থাকত। কিন্তু বলে বুঝিয়েও স্বামীর সেই নেশা ছাড়াতে পারেননি। দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর থেকে বাড়িতেই ছিলেন অরূপবাবু। কারও সঙ্গে বিশেষ কথা বলতেন না। তিনি কাজে গেলে সেই ফাঁকে বঁটি দিয়ে নিজেকে কোপ মারেন।