সুনীত হালদার, হাওড়া: আজও পুরনো রীতি মেনেই পুজো হয় হাওড়ার শিবপুরের বসু বাড়িতে (Howrah Durga Puja 2023)। মাকে প্রতিদিন দেওয়া হয় ভোগ। নেই কোনও বলি প্রথা। পুজোর কটা দিন পুনর্মিলন হয় পরিবারের সদস্যদের।


হাওড়ার শিবপুরের বসু বাড়ির পুজো এবছর ১৮৫ বছরে পড়ল। এই বাড়ির সন্তান ছিলেন বিখ্যাত ইতিহাসবিদ নিমাইসাধন বসু। নিষ্ঠা এবং ভক্তিভরে পুরনো রীতিনীতি মেনে আজও পুজো হয়ে আসছে এখানে।পৌরাণিক রীতি মেনে পুজো হয়। প্রতিদিন মাকে দেওয়া হয় ভোগ। এখানে কোনও বলি প্রথা নেই। পুজোর যাবতীয় কাজ করেন বাড়ির মহিলারাই। এই পুজোর কটা দিন পুনর্মিলন হয় পরিবারের সদস্যদের। আত্মীয়-বন্ধুরাও আসেন বসু বাড়িতে। সন্ধ্যেবেলা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।


তবে হাওড়াতেই শুধু নয়, রাজ্যের একাধিক জেলায় বহু পুরোনো দুর্গা পুজো রীতি চলে আসছে। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের মল্লরাজ পরিবারের মৃন্ময়ীয় পুজো হয়ে চলেছে একটি প্রাচীন বিশেষ পুঁথি অনুসারে। বলিনারায়নি নামের সেই পুঁথির নিয়ম নীতি মেনে আজও পুজো চলে আসছে।উল্লেখ্য, রাজার পুজো, তাই এখানে পুজোর নিয়ম ভিন্ন ধরণের। এই পুজো শুরু হয় জিতাষ্টমীর ঠিক পরের দিন অর্থাৎ নবমী তিথি ধরে। দেবীপক্ষের চতুর্থী তিথিতে মন্দিরে এসেছেন মেজ ঠাকরুন অর্থাৎ মহালক্ষ্মী। আজ সপ্তমীর সকালে এলেন ছোট ঠাকরুণ অর্থাৎ মহা সরস্বতী। এই তিন ঠাকরুণ আসলে স্থানীয় ফৌজদার পরিবারের হাতে আঁকা তিনটি বিশেষ পট। আর এই পটেই হয় বিশেষ পুজো। 


ওদিকে, পূর্ব বর্ধমানের  কাটোয়া সাহা বাড়ি দুর্গা পুজোও খুবই প্রসিদ্ধ (Durga Puja 2023)। এখানে রুপোর সাজে সজ্জিত পালকি করে নবপত্রিকাকে স্নান করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ভাগীরথীর ঘাটে। প্রায় ৩৫০ বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে। ৭ কেজি রুপোর গহনা দিয়ে কাঠের পালকি সাজিয়ে নবপত্রিকাকে নিয়ে যাওয়া এই পুজোর অন্যতম ঐতিহ্য। কাটোয়া তাঁতীপাড়ার সাহা বাড়ি ৩৫০ বছরের পুরনো। তাঁদের পূর্বপুরুষরা সুতোর ব্যবসা করত। অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হওয়ায় জমিদারির একটা অংশ কিনেছিল তারা। তার পথ থেকেই এই দুর্গা পুজোর সূচনা। আজও তাতিপাড়া সাহাবাড়ির পুজো দালানে দুর্গা পুজো হয় মহাসমারোহে। 


আরও পড়ুন, মহাসপ্তমীর মহাপুজো বেলুড় মঠে


প্রসঙ্গত,  চলতি বছরে বেলুড় মঠে ১২৩ তম দুর্গাপুজো হচ্ছে। ১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ বেলুড় মঠে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন। সেই থেকেই নিষ্ঠার সহিত মানা হয় কিছি বিধি। জন্মষ্টমীর দিন কাঠামো পুজো হয় বেলুড় মঠে। চলতি বছরেও তার অন্যথা হয়নি। গত ৭ সেপ্টেম্বর  শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজো হয়েছে বরাবরের রীতি মেনেই।