সুনীত হালদার, হাওড়া: শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে মুখ খুলে দলের বিরাগভাজন হয়েছিলেন।  হাওড়া সদরের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি (Former Howrah BJP President) সুরজিৎ সাহা এ বার তৃণমূলে (TMC) যোগ দিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার হাওড়া শরৎ সদনে তৃণমূলের তফসিলি জাতি এবং উপজাতি বিভাগের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান রয়েছে। সেখানেই আনুষ্ঠানিক ভাবে জোড়াফুলের পতাকা হাতে তুলে নেবেন সুরজিৎ। 


সুরজিতের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় (Arup Roy) । তিনি জানান, তৃণমূলে যোগদান করতে চেয়ে কিছু দিন আগে তাঁর কাছে আর্জি জানান সুরজিৎ। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি নিয়ে তাঁকে দলে টানা হচ্ছে। নিজের কয়েক জন অনুগামীকে নিয়ে তৃণমূলে আসছেন বলে জানিয়েছেন সুরজিৎও (Surajit Saha)।


কিছু দিন আগেই হাওড়া পুরসভার বাম পৌরবোর্ডের প্রাক্তন মেয়র এবং সিপিএম নেত্রী মমতা জয়সওয়াল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। অরূপের দাবি, বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা দলে যোগদানে দল আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। 


আরও পড়ুন: বাড়ি তৈরির সামগ্রী কোথা থেকে কিনবে, কাউন্সিলর ঠিক করবে না, প্রচারে বার্তা মমতার


বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকেই বিজেপি-র রাজ্য এবং স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেন সুরজিৎ। বিশেষ করে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দুর প্রতি প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানাতে দেখা যায় তাঁকে। পুরভোটের আগে হাওড়ার ৫০টি ওয়ার্ডের জন্য যে কমিটি গড়া হয়, তার মাথায় তৃণমূল থেকে আসা রথীন চক্রবর্তীকে (Rathin Chakraborty) বসানোয়, আরও ক্ষুব্ধ হন। 


দলীয় বৈঠকে রাখঢাক না করে নিজের অসন্তোষের কথা জানিয়েও দেন সুরজিৎ। কিন্তু নাম না করে শুভেন্দু সুরজিৎকে নিশানা করেন বলে অভিযোগ। শুভেন্দুর বক্তব্য ছিল, হাওড়া সদরে বিজেপি-র এমন একজন নেতা রয়েছেন, তৃণমূল  নেতা অরূপের সঙ্গে যাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। 


শুভেন্দুর এমন মন্তব্যে কার্যত বিস্ফোরণ ঘটে। সুরজিৎ জানিয়ে দেন, নারদকাণ্ডে (Narada Sting Operation) ভিডিয়োয় শুভেন্দুকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে।  তখন তিনি তৃণমূলে ছিলেন। এখন বিজেপি-তে এসে পুরনো কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভইযোগ আনছেন।  নারদকাণ্ডে শুভেন্দু যদি টাকা না নেওয়ার প্রমাণ দেখাতে পারেন, তাহলে তিনিও অরূপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা না রাখার প্রমাণ দেবেন বলেও সেই সময় মন্তব্য করেন সুরজিৎ। 


এর পরই, গত  ১০ নভেম্বর, ছটপুজোর দিন সুরজিৎকে দলবিরোধী কাজে লিপ্ত থাকা এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার করে বিজেপি। কিন্তু সুরজিতের যুক্তি ছিল, তিনি ন্যায্য কথাই বলেছেন। শুভেন্দু এখন সর্বেসর্বা হয়ে উঠেছেন। তাঁর কথাতেই দল চলছে। তাই অন্যায় ভাবে তাঁকে সরানো হয়েছে। তার পর থেকে সে বাবে খবরে না থাকলেও, এ বার সুরজিতের তৃণমূলে যোগ দওয়ার খবরে জেলা বিজেপি-তে দলীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।