অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: বিষ খাইয়ে নিজের সন্তানকে জঙ্গলে ফেলে এসেছিলেন মা! শুনে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, বাস্তবে এমনই অভিযোগ উঠেছে ঝাড়গ্রামে। গিধনির জঙ্গল থেকে চার বছরের শিশুর মৃতদেহ উদ্ধারের এক মাসের মাথায় তার মাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।


মায়ের কোল, সন্তানের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়। আর সেই মা-ই কিনা শিশু সন্তানের ঘাতক। জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে বিষ খাইয়েছে নিজের সন্তানকে। এমনই অভিযোগ উঠেছে ঝাড়গ্রামের জঙ্গল থেকে শিশু উদ্ধারের ঘটনায়। অভিযুক্ত মা-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 


পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরের মোহনপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে লক্ষ্মী হেমব্রমকে। পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরায় মহিলা স্বীকার করেছেন, নিজের সন্তানকে বিষ খাইয়ে জঙ্গলে ফেলে রেখে চলে গিয়েছিলেন তিনি। বুধবার ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে, ধৃতের ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। 


আরও পড়ুন, 'ওমিক্রন মারাত্মক কিছু নয়, ছোঁয়াচে কিন্তু মৃত্যুভয় কম', রাজ্যবাসীকে আশ্বাস মমতার


সরকারি আইনজীবী অনিল মণ্ডল বলেন, "বিষ খাইয়ে সন্তানকে হত্যা। বিষ এবং সাইকেল উদ্ধারের জন্য হেফাজতে চায় পুলিশ। আদালত ৩ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছে।" গত ১৪ নভেম্বর জামবনির গিধনির জঙ্গল থেকে এক শিশুর গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ছোট্ট শরীরে হাত দুটো পর্যন্ত ছিল না। 


পুলিশ সূত্রে খবর, এলাকা থেকে স্কুলের ব্যাগ, বই ও জামাকাপড় মিলেছিল।  সেই সূত্র ধরে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, শিশুর নাম সাগেন হেমব্রম। বয়স ৪ বছর। শিশুর দেহ উদ্ধারের ঠিক এক মাসের গ্রেফতার হলেন তার মা। 


পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরায় মহিলা স্বীকার করেছেন, গত ১০ নভেম্বর ছেলেকে সাইকেলে চাপিয়ে গিধনির জঙ্গলে নিয়ে যান তিনি। সেখানে নিজের সন্তানকে প্রথমে বিষ খাওয়ান। ৪ বছরের শিশু নিস্তেজ হয়ে পড়তেই তাকে জঙ্গলে ফেলে রেখে চলে যায় মা। 


পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত মহিলার বাপের বাড়ি ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়ার ঠাকুরথান গ্রামে। আর শ্বশুরবাড়ি জামবনির বিরাটডি গ্রামে। গত ফেব্রুয়ারিতে মহিলার স্বামী মারা যান। বিষ প্রয়োগেই কি শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়েছে? শিশুর মৃতদেহে হাত আর মাথা ছিল না কেন? ধৃত মহিলাকে জেরা করে এই সব প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর চান গোয়েন্দারা।