ভাস্কর ঘোষ, হাওড়া: দিকে দিকে সোনার দোকানে ঘটনায় আতঙ্কিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী তথা সাধারণ মানুষ (Howrah Gold Shop Businessman)। উদ্বিগ্ন প্রশাসনও। এরই মাঝে এক চাঞ্চল্যকর একটি ঘটনা ঘটেছে বেলুড়ে।
গতকাল সকালে বেলুড়ের গিরিশ ঘোষ রোড অঞ্চলের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী সকালে দোকান খুলতে, তার দোকানের সামনে লাগানো সিসি ক্যামেরাটি দেখতে না পেয়ে চমকে যান। দোকানের ভেতরে থাকা সিসিটিভি চালিয়ে দেখতে পান, রাতের অন্ধকারে কয়েকজন দুষ্কৃতীর ওই ক্যামেরাটি খুলে নেওয়ার ছবি ! এরপর খোঁজখবর নিতে গেলে দেখা যায় ওই দুষ্কৃতীরা একইভাবে ওই এলাকায় থাকা বিভিন্ন জায়গায় লাগানো সাত থেকে আটটি ক্যামেরা খুলে নিয়ে গিয়েছে। আর এতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ী।
দিকে দিকে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় এমনিতেই তিনি আতঙ্কিত। তার উপর তার দোকানের সামনে সিসিটিভি খোলার ঘটনায় তিনি রীতিমতো ভয়ে আছেন । এটা তিনি পরবর্তীকালে তার দোকানে কোনও ডাকাতির ঘটনা ঘটার পূর্ব প্রস্তুতি বলে মনে করছেন। রীতিমতো আতঙ্কিত ব্যবসায়ীটি সহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে বেলুড় থানার পুলিশ সিসিটিভি দেখে দুষ্কৃতীদের সনাক্ত করে তাঁদের ধরার তল্লাশি চালালেও পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, তারা সকলেই পলাতক। পুলিশ তাঁদের খোঁজ চালাচ্ছে।
গত কয়েক বছরে রাজ্য়ে বেশ কয়েকটি সোনার দোকান ও বিপণিতে ডাকাতি হয়েছে। কোথাও কোথাও প্রাণ পর্যন্ত গেছে। প্রশ্ন উঠছে, কেন বারবার টার্গেট হচ্ছে সোনার দোকান? আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কেন বারবার ব্য়র্থ হচ্ছে প্রশাসন? একেবারে দিনেদুপুরে। পরিচয় গোপন রাখতে মুখ ঢাকাও নয়। একেবারে খোলা মুখ। এক কথায় আরও বেপরোয়া। মঙ্গলবার দুপুরে এভাবেই হাওড়ার ডোমজুড়ে সোনার দোকানে ক্রেতা সেজে ঢুকে দোকান মালিককে মারধর করে লুঠপাট চালাল চারজনের দুষ্কৃতীদল। কিন্তু এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গত কয়েক বছরে এভাবে কখনও ক্রেতা সেজে ঢুকে, কখনও বা একেবারে ফিল্মি কায়দায় বারবার টার্গেট হয়েছে সোনার দোকান বা সোনার গয়নার বিপণি। ভরদুপুরে রানাঘাটের মতো জায়গায় রানিগঞ্জের শোরুমে লুটপাট করে গুলি চালাতে চালাতে পালাল দুষ্কৃতীরা।
আরও পড়ুন, মাঠ থেকে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন, বাজ পড়ে একাধিক মৃত্যু পূর্ব বর্ধমানে..
এর আগে গত বছরের ২৯ অগাস্ট, নদিয়ার রানাঘাট ও পুরুলিয়ায়, সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডের দুই শোরুমে লুঠপাট চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। দুপুরে, পুরুলিয়ার নামোপাড়ার শোরুমে ও তার দু-ঘণ্টা পর রানাঘাট পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গা দাস পার্ক এলাকায় সেনকো গোল্ডের শোরুমে হানা দিয়েছিল দুষ্কৃতীদের দল। পালানোর সময় পুলিশের সঙ্গে একপ্রস্থ গুলির লড়াইও চলে দুষ্কৃতীদের। ওই ঘটনায় ৫জনকে গ্রেফতার করা হলেও, গুলিবিদ্ধ একজনের পরে মৃত্যু হয়। পুরুলিয়া ও রানাঘাটের এই ঘটনার আগে,২০২৩-এর ২৫ অগাস্ট, পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে, এই সোনার দোকানেও হানা দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। বাধা দেওয়ায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন মালিক। তার আগে ২০২৩-এর ২৪ মে ব্যারাকপুরের আনন্দপুুরীতে সোনার দোকানের মালিকের ছেলেকে গুলি করে খুন করে পালায় ডাকাতরা।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।