সুনীত হালদার, হাওড়া: নির্বুদ্ধিতার উদাহরণস্বরূপ আজও তাঁর প্রথম জীবনের গাথা। গাছের যে ডালে বসেছিলেন, সেই ডালই নিবিষ্ট মনে কেটে চলেছেন কেউ, ভাবলেই পেটে খিল ধরে যায়। সেই ব্যক্তিই পরবর্তী জীবনে হয়ে উঠেছিলেন মহাকবি কালিদাস (Howrah News) । সেই গাথাও অমর হয়ে রয়েছে। 'অভিজ্ঞান শকুন্তলম', 'ঋতুসংহার',  'কুমারসম্ভব', 'মেঘদূতম',  'রঘুবংশে'র মতো অনন্য সৃষ্টি বেরিয়েছিল তাঁর কলম থেকে। 


সেই মহাকবি কালিদাসেরই মূর্তি বসল হাওড়ায় (Howrah News)। আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে ‘মেঘদূত’-এর শ্রষ্টা কবি কালিদাসের জন্মদিন৷ প্রতি বছরের মতো এবছরও কালিদাসের জন্মদিবস পালন করল হাওড়া পণ্ডিত সমাজ। তাদের উদ্যোগে হাওড়ার বেলেপোল মোড়ে মহাকবি কালিদাসের শ্বেত পাথরের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হল। মূর্তি উন্মোচন করলেন প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামল সেন।

পণ্ডিত সমাজের প্রতিষ্ঠাতা পণ্ডিত মুরারীমোহন বেদান্তাদিতীর্থের ইচ্ছে ছিল, কালিদাসের মূর্তি স্থাপনের। অবশেষে তাঁর মৃ্ত্যুর ১০ বছর পর সেই ইচ্ছে পূরণ হল। মূর্তি উন্মোচন করেন প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামল সেন। উপস্থিত ছিলেন হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। মূর্তি উন্মোচনের পর তাতে মাল্যদান হয়। বক্তৃতা করেন উপস্থিত অতিথিরা।


আরও পড়ুন: North Sikkim: হড়পা বান-ধসে বিধ্বস্ত উত্তর সিকিম, আটকে প্রায় ২ হাজার পর্যটক


এ দিন ওই অনুষ্ঠানে প্রসূন বলেন, "সংস্কৃতে মহাকাব্য রচনা করেছেন। কিন্তু তাঁকে আমরা ভুলতে বসেছি। তাই মূর্তি বসানোর অনুরোধ যখন পেলাম, সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যাই। ভারতের আর কোথাও কালিদাসের মূর্তি রয়েছে কিনা জানা নেই আমার। তবে এই মূর্তি হাওড়ায় বসাতে পেরে আমি গর্ব বোধ করছি।"


হাওড়া পণ্ডিত সমাজের সভাপতি তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমরা হাওড়ায় সংস্কৃত ভাষা এবং সাহিত্যচর্চা করি। তাই প্রতি বছর কালিদাসের জন্মদিন পালিত হয়।" হাওড়াতে টোলের মাধ্যমে এখনও সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে এই পণ্ডিত সমাজ। তাঁদের উদ্যোগেই শহরে বসল কালিদাসের মূর্তি।


তরুণবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা বহুদিন ধরে মূর্তি বসানোর চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত প্রসুনবাবুর সহযোগিতায় তা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি। এ দিনের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি প্রণব কুমার চট্টোপাধ্যায়ও। হাওড়ায় তাঁর মূর্তি বসায়, যুবসমাজ কালিদাসকে জানতে, বুঝতে আরও উৎসাহিত হবে বলে মত বিশিষ্টজনেদের। আগামী দিনে সংস্কৃত ভাষা এবং সাহিত্য চর্চার পরিসর আরও বর্ধিত হবে বলেও মনে করছেন তাঁরা।