সুনীত হালদার, জগৎবল্লভপুর: হাওড়ার (Howrah) জগৎবল্লভপুরে অঙ্গনওয়াড়ি (Anganwari Center) কেন্দ্র গুঁড়িয়ে দিয়ে শপিং কমপ্লেক্স তৈরির চেষ্টার অভিযোগ উঠল স্থানীয় ক্লাবের বিরুদ্ধে। অনিশ্চিত ৯০ জন পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ পেয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত। অনুমতি ছাড়াই স্কুলবাড়ি ভাঙা হয়েছে বলে স্বীকার করেছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।


অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গুঁড়িয়ে শপিং কমপ্লেক্স তৈরির চেষ্টা: প্রায় ২৪ বছর ধরে এখানেই সরকারি সাহায্যে চলত শিশু শিক্ষা ও বিকাশ কেন্দ্র। কিন্তু সেটাই এখন পরিণত হয়েছে ভাঙা ইটের স্তূপে। অভিযোগ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের স্কুলঘর গুঁড়িয়ে, এখানেই তৈরি হচ্ছে শপিং কমপ্লেক্স গড়ার তোড়জোড়। হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের নিমাবালিয়া গ্রামে স্থানীয় ক্লাব সদস্যদের বিরুদ্ধে উঠল দাদাগিরির অভিযোগ। জগৎবল্লভপুরের অভিভাবক ও বাসিন্দা রমা বাগের কথায়, “বাচ্চাদের স্কুল ছিল। ক্লাবের থেকে ভেঙে দিয়েছে। আমরা চাই এখানে স্কুল থাকুক। না হলে বাচ্চারা পড়াশোনা করতে পারছে না।’’


এই অবস্থায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে গ্রামের প্রান্তিক শ্রেণির ৯০ জন পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ। নিরুপায় হয়ে স্থানীয় একটি দোকানেই চলছে শিশুদের পঠনপাঠন ও মিড ডে মিলের রান্নাবান্না। জগৎবল্লভপুরের বাসিন্দা দিলশার আলি খান বলেন, “১৯৯৮ এ আমরা গ্রামের লোকেরা চাঁদা তুলে এই স্কুল করেছিলাম। মাস দেড়েক আগে ক্লাবের থেকে ভেঙে দিল। কাউকে কিছু জানায়নি। আমরা পঞ্চায়েত, বিডিও, জেলাশাসককে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’ প্রশ্ন উঠছে, যে জমি শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের নামে রেজিস্ট্রি করা আছে, সেখানে কীভাবে শপিং কমপ্লেক্স তৈরি হয়? আর এই স্কুল ভাঙার নির্দেশই বা দিল কে? প্রশ্নের মুখে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে অভিযুক্ত ক্লাব কর্তৃপক্ষ! ওই ক্লাবের সম্পাদক অমিত বাগের দাবি, “এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে স্কুল ভেঙে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করা হবে। তবে ভাঙ্গার আগে কোন অনুমতি নেওয়া হয়নি।’’


এই অবস্থায় স্কুল বাঁচাতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন এলাকাবাসীদের একাংশ। অভিযোগ পেয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত। শিয়ালডাঙ্গা পঞ্চায়েতের প্রধান স্বপন কুমার কাঁড়ার বলেন, “পঞ্চায়েত স্কুল ভাঙার কোন অনুমতি দেয়নি। ব্যাপারটা জানার পর স্কুলের জায়গায় যে কোন ধরনের নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ গ্রামবাসীরা চাইছেন, শিশু শিক্ষা ও বিকাশ কেন্দ্রটিকে দ্রুত আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হোক। পাশাপাশি কার অঙ্গুলিহেলনে স্কুলের ঘর ভেঙে শপিং কমপ্লেক্স তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়েছিল, তাঁরও শাস্তির দাবি উঠছে। 


আরও পড়ুন: Medinipur News: তৃণমূলের শহিদ বেদিতে বিজেপি-র পতাকা! মেদিনীপুরে জোর তরজা