সুনীত হালদার ও পার্থপ্রতিম ঘোষ, হাওড়া: বছরের পর বছর ধরে জমে থাকা ক্ষোভ? না কি মানসিক সমস্যা? পরিবারের চার সদস্যকে খুন করার কারণ কী? হাওড়ার হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ডে (Howrah Murder) এখন এই প্রশ্নগুলি ভাবাচ্ছে পুলিশকে। ধৃতকে ৩ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত (Court)।


খুনের ঘটনায় উঠছে নানা প্রশ্ন: “একাই ৪ জনকে খুন করেছি। প্রত্যেকে মারা গেছে তো?  রাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। রেগে গেলে, নিজেকে মেরে ফেলতে পারি। স্বামীকেও খুন করতে পারি।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, এমন সব কথাই বলছেন হাওড়ায় চার জনকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মূল সদস্য। পুলিশ সূত্রে দাবি-  কখনও কাঁদছেন, কখনও চিৎকার করে এইসব বলে চলেছেন হাওড়ায় পরিবারের ৪ জনকে খুনে অভিযুক্ত পল্লবী ঘোষ (Pallabi Ghosh)। ক্ষোভ থেকেই খুন? না কি নেপথ্যে মানসিক সমস্যা? হাওড়ার এমসি ঘোষ রোডের হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ডে এই দুটো বিষয়ই ভাবাচ্ছে পুলিশকে।


রাত থেকে হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা ও হাওড়া থানার পুলিশ দফায় দফায় জেরা করে ‍খুনের অভিযোগে, ধৃত বাড়ির ছোট বউ পল্লবী ঘোষকে। কিন্তু, পরিবারের সদস্যদের ওপর কীজন্য এত আক্রোশ ছিল বছর ৩০-এর পল্লবীর? পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরায় পল্লবী জানিয়েছেন, ১০ বছর আগে দেবরাজ ঘোষের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে। স্বামীর তেমন রোজগার না থাকায় যৌথ সংসারে প্রথম থেকে গঞ্জনার মুখে পড়তে হয়। কারণে-অকারণে কু-কথা, গালিগালাজ করতেন ভাসুর।


পুলিশ সূত্রে দাবি, একের পর এক এলোপাথাড়ি কোপ মেরে খুন করা হয় চারজনকে। এমনকী, ভাসুরের যৌনাঙ্গ কেটে ফেলেন পল্লবী। পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরায় পল্লবী জানিয়েছেন, বছর দু’য়েক আগে তাঁর শ্লীলতাহানি করেন ভাসুর। এনিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পর বাড়তে থাকে অত্যাচার। পুলিশ জানতে পেরেছে,  রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন না পল্লবী। এর জন্য ওষুধও খেতেন। আটক করার সময় থেকে অসংলগ্ন আচরণ করছেন তিনি। পুলিশকে ধোঁকা দিতেই এই আচরণ, না কি প্রকৃত মানসিক সমস্যা রয়েছে তাঁর? জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ঘটনার সময় বাড়িতেই ছিলেন পল্লবীর স্বামী দেবরাজ। স্ত্রীকে থামাতে না পেরে পালিয়ে যান। ঘটনায় খুনের ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ধৃতকে ৩দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।


আরও পড়ুন: SSC Scam: ১৭ অগাস্ট পর্যন্ত শান্তিপ্রসাদ সিন্হা ও অশোক সাহার সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ