উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট লুঠ ! পাঁচলার (Panchla) তৃণমূল বিধায়ককে নাম করে নিশানা করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। পাল্টা শুভেন্দুর ঘাড়ে দায় ঠেললেন হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA)। কার্যত মেনে নিলেন ভোট লুঠের অভিযোগ।


২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীশূন্য় করতে বলেছিলেন শুভেন্দুই। ভোট লুঠের অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর ঘাড়েই দায় ঠেললেন তৃণমূল বিধায়ক। 


বৃহস্পতিবার, হাওড়ার পাঁচলায় সভা ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। সেই সভা থেকে পাঁচলার তৃণমূল বিধায়কের উদ্দেশে ভোট লুঠ, মনোনয়নে বাধা সহ একাধিক অভিযোগ তোলেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেছিলেন, "এখানে পাঁচলাতেও করেছেন গুলশন মল্লিক। ৭ দিন ধরে লাঠি, বাঁশ, বোমা, বন্দুক, গুন্ডা নিয়ে বিডিও অফিস অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। যাতে কেউ নমিনেশন না করে, ৩৪ শতাশ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ভোটের দিন লুঠ করার চেষ্টা। অনেক গ্রাম রুখে দিয়েছে। সাঁকরাইল, পাঁচলা, ডোমজুড়, উলুবেড়িয়ায় কোনও জায়গায় গণনাতে বিরোধী এজেন্ট ছিল না। মেরে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।"


এ প্রসঙ্গে এবার পাল্টা জবাব দিলেন পাঁচলার তৃণমূল বিধায়ক গুলশন মল্লিক। আজ তিনি বলেন, "আমরা তো বিগত দিনে শুভেন্দুদা যখন আমাদের দলে ছিলেন, তখন যেভাবে নির্দেশ দিতেন, সেভাবে কাজ করতে হতো। এখন আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিচ্ছেন, ভোট করতে হবে। অতএব, আমরা ভোট করব, প্রার্থী দিতে যাব। সংগঠনের ক্ষমতা থেকে আমরা জিতে নেব। দেখিয়ে দেব, সংগঠনের বলে আমরা পাঁচলায় যেভাবে বিগত দিনে রেজাল্ট করেছি, তার থেকে ভাল রেজাল্ট করব।"


তৃণমূল বিধায়ককে প্রশ্ন করা হয়, আগেরবার কি শুভেন্দুবাবুই আপনাদের প্রার্থী দিতে না বলতেন ? এই প্রশ্নের উত্তরে গুলশন মল্লিক বলেন, "শুভেন্দুবাবু যখন আমাদের দলে ছিলেন, সবাই এসেছেন এমন, আমাদের কেন্দ্রের সবাই এসেছেন, তখন সেইভাবে আমাদের বলতেন, এখানে বিরোধীশূন্য করতে হবে।" বিরোধীশূন্য মানে কি ভোটে হারিয়ে নাকি যেভাবেই হোক ? এর উত্তরে বিধায়কের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, "সেটা বুঝে নিন।"


এপ্রসঙ্গে বিধানসভার মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা বলেন, তৃণমূলের কে দায়িত্বে ছিলেন জানি না। কিন্তু আমাদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। ভোট লুঠ হয়েছে। 


সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, আমরা তো এটাই বলে এসেছি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও ভোট হয়নি। আজ তৃণমূলের নেতারা স্বীকার করেছেম। ভোট হল না। ৫ বছর ধরে পঞ্চায়েত চালাল, তার কী হবে? বীরভূম, ডায়মন়্ড হারবারে ভোট হয়নি, তাও কি শুভেন্দুর নির্দেশেই ? ওই কি সবথেকে বড় নেতা ? 


৫ বছর পর, সামনে আবার একটা পঞ্চায়েত নির্বাচন। এবার কি গতবারের ছবিটা বদলাবে ? বলবে সময়।