কলকাতা: 'আমায় জেলে রাখলে পশ্চিমবঙ্গ এগিয়ে যাবে'। বিমানবন্দরে চূড়ান্ত ধাক্কাধাক্কির মধ্যেও সাংবাদিকদের এমনটাই বললেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। কম্বল বিতরণকাণ্ডে পদপিষ্টের ঘটনায় শনিবার গ্রেফতার হয়েছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। এ দিনই তাঁকে নয়ডা থেকে গ্রেফতারে করে রাজ্য পুলিশ। এর পর বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়। বিমানবন্দরে ঢোকা মাত্রই তাঁকে ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল চত্বরে। সেখান থেকে বিজেপি নেতাকে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করলে কার্যত সর্বশক্তি দিয়েই গাড়ির বাইরে থাকার চেষ্টা করলেন তিনি। কথা বলতে চাইলেন সাংবাদিকদের সঙ্গেও। নিজের মেয়েকেও ডেকে দিতে বললেন পুলিশের উদ্দেশে।


অবশেষে তাঁকে টেনে গাড়িতে তোলেন পুলিশ আধিকারিকরা। সব মিলিয়ে শনিবার রাতে জিতেন্দ্রর গ্রেফতারি ও কলকাতায় ফেরা ঘিরে কার্যত ধস্তাধস্তি চলল বেশ খানিক্ষণ। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে নিয়ে আসানসোলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, আজ রাতে তাঁকে আসানসোল উত্তর থানায় রাখা হতে পারে। আগামীকাল মেডিক্যাল টেস্টের পর তাঁকে আসানসোল আদালতে তোলা হবে। 


কম্বল বিতরণকাণ্ডে পদপিষ্টের ঘটনায় বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি গ্রেফতার (Jitendra Tiwari) হন। যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্রকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। নয়ডায় আসানসোল এবং দুর্গাপুর কমিশনারেট পুলিশের হাতে গ্রেফতার বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র (Jiten Tiwari Arrested)। এর আগে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন জিতেন্দ্র। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর আবেদন খারিজ করে। এর পর সুপ্রিম কোর্টেও যান জিতেন্দ্র। কিন্তু সেখানে শুনানির আগেই গ্রেফতার হলেন জিতেন্দ্র। ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও, তিনি বেরিয়ে যাওয়ার পরই হুলস্থুল বাধে বলে জানা যায়।


গত ১৪ ডিসেম্বর আসানসোলে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়। হুড়োহুড়ির মধ্যে প্রাণ যায় তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রী-সহ তিন জনের। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওই অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন, স্থানীয় বিজেপি কাউন্সিলর ও পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী চৈতালি, যিনি জিতেন্দ্রর স্ত্রী।  ওই কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার পরই হুলস্থুল বাধে বলে জানা যায়।


সেই ঘটনায় পুলিশের এফআইআর-এ জিতেন্দ্র, তাঁর স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারি-সহ একাধিক নাম ছিল। অনিচ্ছাকৃত খুন ও খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। নিহতদের আসানসোলের কাল্লার বাসিন্দা চাঁদমণি দেবী, ঝালি বাউড়ি এবং রামকৃষ্ণডাঙার ১২ বছরের প্রীতি সিংহ হিসেবে শনাক্ত করা যায়। সেই ঘটনায় গ্রেফতারও করা হয় কয়েক জনকে। 


এই ঘটনায় জিতেন্দ্রর বাড়িতেও যায় পুলিশ। বেশ কয়েক বার, বাড়িতে তালা ঝুলতে দেখে ফিরে আসতে হয় পুলিশকে। দীর্ঘ টালবাহানার পর চৈতালিকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। তাতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তোলেন জিতেন্দ্র। সেই নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে রক্ষাকবচও পান চৈতালি। কিন্তু পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত বন্ধ করা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় আদালত। চৈতালিতে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়।


আরও পড়ুন: Enforcement Directorate: ইডির নজরে ঘনিষ্ঠরা শান্তনু ঘনিষ্ঠরা, এবার অয়ন শীলের সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশি