দিঘা: রামনবমীকে ঘিরে হিংসা ছড়িয়েছে হাওড়া থেকে হুগলিতে (Ram Navami Violence)। সেই নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছে। সেই আবহে দিঘা থেকে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বিজেপি (BJP) এবং সিপিএম-কে (CPM) এক আসনে বসিয়ে আক্রমণাত্মক স্বর শোনা গেল মমতার গলায়। তাঁর বক্তব্য, "বাংলার মানুষ হিংসা ভালবাসেন না। হিংসা বাংলার সংস্কৃতি নয়। এটা অপরাধীদের দিয়ে হিংসা তৈরি করা। আগে সিপিএম এমন করত।"
রামনবমীকে ঘিরে হিংসা ছড়িয়েছে হাওড়া থেকে হুগলিতে, মুখ খুললেন মমতা
দিঘায় এ দিন রামনবমীকে ঘিরে হিংসা নিয়ে মুখ খোলেন মমতা। তিনি বলেন, "আমি আপনাদের এখানে মিটিংয়ে এসেছি। আসার জো নেই আমার। সারা ক্ষণ আমাকে পড়ে থাকতে হয়, কখন কোথায় গিয়ে দাঙ্গা করবে বিজেপি। ওরা বোঝে না, বাংলার মানুষ দাঙ্গা ভালবাসেন না। দাঙ্গা করা বাংলার সংস্কৃতচি নয়। আমরা দাঙ্গা করি না। রাম নবমীর মিছিলে বন্দুক নিয়ে নৃত্য করছে। রামচন্দ্র বলেছিলেন বন্দুক নিয়ে মিছিল করতে?"
সকলের উদ্দেশে এ দিন মমতা বলেন, "দয়া করে দাঙ্গাকে কেউ পা দেবেন না। উস্কানি দেবেন না দাঙ্গায়, প্ররোচনা দেবেন না দয়া করে। শান্তি বজায় রাখুন। মা দুর্গা কখনও দাঙ্গা করতে বলেননি। আল্লা কখনও দাঙ্গার কথা বলেননি। শান্তির কথা বলেছেন। খ্রিস্টধর্মে, শিখ ধর্মেও দাঙ্গার কথা বলা নেই। এরা কারা, বন্দুক নিয়ে চলে এসেছে! হাতেনাতে ধরা পড়েছে। মুঙ্গের থেকে ধরা পড়েছে ওই ছেলেটা। বাংলার কেউ নয়। ওকে বাইরে থেকে ভাড়া করে আনা হয়েছিল। "
আরও পড়ুন: Governor On Rishra Violence : ''অপরাধীরা গরাদের ভিতরে যাবে'', রিষড়ায় বার্তা রাজ্যপালের
সিপিএম-বিজেপি-কে এক আসনে বসিয়ে মমতা বলেন, "এটা সিপিএম করত। ৩৪ বছর অত্যাচার দেখেছেন তো! ভুলে যাননি তো! নন্দীগ্রাম, খেজুরি, তমলুক, মহিষাদল, কোলাঘাট, চণ্ডীপুর, হলদিয়া ভুলে যাননি তো! মনে আছে, হলদিয়ায় মিটিং করতে গিয়েছিলাম। লোকাল মাইক্রোফোনও নিতে দেয়নি। কলকাতা থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে এসেছিলাম। রাস্তা আটকে দিয়েছিল নন্দীগ্রামে।"
BJP এবং CPM-কে এক আসনে বসিয়ে আক্রমণ করলেন মমতা
এ দিন মমতার কথায় উঠে আসে শেখ সুফিয়ানের কথাও। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় অতি সম্প্রতিই জামিন পেয়েছেন তিনি। এ দিন মমতা বলেন, "শেখ সুফিয়ানদের বাদ দিয়ে নন্দীগ্রাম হয় না। পীযূস ভুঁইয়াদের বাদ দিয়ে হয় না নন্দীগ্রাম। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। একা করব, বাকি কেউ থাকবে না, এমন হয় না।"
মমতা যখন দিঘায়, এ দিনই রামনবমীর হিংসা পরিস্থিতি দেখতে রিষড়ায় পৌঁছন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেখানে তিনি বলেন, "জিও ওউর জিনে দো। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে এখানে এসেছি। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা শান্তিভঙ্গ করেছে, তাদের বরদাস্ত নয়। বাংলায় দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন চলছে। এবার তার শেষ হওয়া প্রয়োজন। সবাইকে একজোট হয়ে এই নৈরাজ্যকে উৎখাত করতে হবে।"