রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: দেবী এখানে পেটকাটি দুর্গা (Durga Puja 2022)। মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) রঘুনাথগঞ্জে ৪০০ বছরেরও বেশি পুরনো পুজো ঘিরে নানা কাহিনি রয়েছে। ঐতিহ্যের টানে আজও এখানে কাতারে কাতারে দর্শনার্থী হাজির হন। 


পেটকাটি দুর্গার পুজো


মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জে, গদাইপুর গ্রামের এই পুজোর পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস। দেবী এখানে পূজিতা হন পেটকাটি দুর্গা নামে। এই নামের নেপথ্যেও রয়েছে ইতিহাস।


লোকমুখে শোনা যায়, এই মন্দিরে একসময় কৃষ্ণের মূর্তি থাকায় বলি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই রাতেই পুরোহিতের এক কন্যা উধাও হয়ে যান। পুরোহিতকে স্বপ্নাদেশ দেন দেবী। পরদিন সকালে, প্রতিমার পেট কেটে বের করা হয় তাঁর কন্যাকে। সেই থেকে পেটকাটি দুর্গার পুজোয় কখনও বলি বন্ধ হয়নি।


বংশ পরম্পরায় পেটকাটি দুর্গার পুজো করে আসছে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার। বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের সদস্য আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, 'এখানে দুর্গা পেটকাটি নামে খ্যাত কারণ বহু বছর আগে কৃষ্ণ মূর্তি ছিল। কিন্তু মা দুর্গা শাক্ত দেবী। বৈষ্ণব ও শাক্তের দ্বিমতের জন্য কৃষ্ণমূর্তির স্থানান্তর করা হয়। তাই বলি প্রথাও বন্ধ করা হয়। বলা হয় সেই রাতে পুরোহিত মশাইয়ের এক কন্যাকে মা ভক্ষণ করেন। স্বপ্নাদেশে মায়ের পেট কেটে মেয়েটিকে বের করে নেওয়ার কথা বলা হয়। মা পেটকাটির পেট কেটে সেই সন্তান বের করা হয়েছিল বলেই এখানের দুর্গা এই নামে খ্যাত।'


 



৪০০ বছরেরও বেশি পুরনো এই পুজো ঘিরে আজও মানুষের উন্মাদনা একইরকম। 


আরও পড়ুন: Durga Puja 2022: না পোহায় যেন নবমী নিশি, শেষ বেলায় মণ্ডপে মণ্ডপে কুমারী পুজোর আয়োজন


অন্যদিকে, নবমীতে চরম ব্যস্ততা জেলার বনেদি পুজোগুলোতেও। কোচবিহারের বড়দেবী থেকে কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে ধূমধামে পালিত হল নবমীর পুজো। প্রাচীন রীতি মেনে পুজো হল বিষ্ণুপুরের মল্লভূম রাজবাড়িতে। বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে আজ নব কুমারী পুজো হয়। কুব্জিকা, মালিনী, সুভগা, কালিকা-সহ দেবীর নানা রূপ। ৯ জন কুমারীকে দুর্গার ন’টি রূপে সাজিয়ে কুমারী পুজো করা হয়। নব কুমারী পুজো দেখতে মন্দির চত্বরে সকাল থেকেই ভিড়। কুমারী পুজোর পরে ভোগ খাওয়ার পালা। বর্ধমানের এই সর্বমঙ্গলা মন্দিরে অষ্টদশভূজা সর্বমঙ্গলা দেবীকে দুর্গা রূপে পুজো করা হয়৷ আর প্রতিবছরই নবমীর দিন হয় কুমারী পুজো। ১৭০২ সালে বর্ধমানের মহারাজা কীর্তিচাঁদ সর্বমঙ্গলা মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।