কলকাতা: সংসদ থেকে মহুয়া মৈত্রের বহিষ্কার ঘিরে সরগরম দেশের রাজনীতি। তৃণমূল সাংসদের বহিষ্কার ঘিরে কার্যত একজোট I.N.D.I.A-জোটের সব শরিক। এদিন মহুয়া মৈত্রের (Mahua Moitra) পাশে দাঁড়িয়ে সরব হয়েছেন লোকসভার কংগ্রেসের দলনেতা ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী (Ashir। তিনি বলেন, 'একটা বাংলার মেয়েকে তাঁর অপরাধ কী সেটা না জেনে এবং অপরাধের জন্য় কতটা বিচার হওয়া উচিত, কতটা সাজা হওয়া উচিত, তার কোনও পরিমাপ না করে, সরাসরি ফাঁসি দিয়ে দেওয়া হল। আর বিচারকও ফাঁসি দেওয়ার আগে আসামিকে জিজ্ঞেস করে, আপনার কিছু বলার আছে? এখানে সেটার পর্যন্ত সুযোগ দেওয়া হল না। একেবারে খতম করে দাও।'


মোদির (Narendra Modi) সরকার বরাবর মহিলাদের এগিয়ে নিয়ে আসার কথা বলেন। মহুয়া মৈত্রকে সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কার করার ইস্যুতে সেই প্রসঙ্গ টেনে বিজেপিকে নিশানা করলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা এবং বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। মহুয়া মৈত্রকে বাংলার মেয়ে বলে উল্লেখ করলেন তিনি। অধীর বলেন, 'একটা বাংলার মেয়েকে তাঁর অপরাধ কী সেটা না জেনে, এবং অপরাধের জন্য় কতটা বিচার হওয়া উচিত, কতটা সাজা হওয়া উচিত, তার কোনও পরিমাপ না করে, সরাসরি ফাঁসি দিয়ে দেওয়া হল। আর বিচারকও ফাঁসি দেওয়ার আগে আসামিকে জিজ্ঞেস করে, আপনার কিছু বলার আছে? এখানে সেটার পর্যন্ত সুযোগ দেওয়া হল না। একেবারে খতম করে দাও।'


কেন মহুয়ার সঙ্গে এমন করা হল তার ব্যাখাও দিয়েছেন তিনি। অধীরের দাবি, মহুয়া মৈত্র সংসদে এমন কিছু প্রশ্ন তুলেছে যে সেই প্রশ্ন শাসক দলের জন্য অস্বস্তি তৈরি করেছে। তাঁর কটাক্ষ,  'প্রশ্ন কী হল, তা কেউ জানল না। সেই প্রশ্নের উত্তর কী, তা কেউ জানল না। কিন্তু সেই প্রশ্নের অপরাধে ফাঁসি হয়ে গেল।'


এর আগে টাকার বিনিময়ে প্রশ্নকাণ্ডে, শুক্রবার বেলা ১২ টা নাগাদ, কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে ৪৯৫ পাতার রিপোর্ট পেশ করে লোকসভার এথিক্স কমিটি। রিপোর্টে মহুয়াকে বহিষ্কারের সুপারিশের পাশাপাশি, তৃণমূল সাংসদের আচরণকে অত্য়ন্ত আপত্তিকর, অনৈতিক, জঘন্য় ও অপরাধমূলক বলে উল্লেখ করা হয়। মহুয়ার বিরুদ্ধে তদন্তের সুপারিশও করে এথিক্স কমিটি। 


ওই রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য এবং মহুয়া মৈত্রকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার আর্জি জানিয়ে স্পিকারকে চিঠি দেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। একই দাবি তোলা হয় কংগ্রেসের তরফেও। কংগ্রেসের তরফে অধীর চৌধুপী বলেন, 'সব মিলিয়ে ৪৯৫ পাতার রিপোর্ট। এটা ডাউনলোড করে তারপর পড়তে হবে। মানুষের পক্ষে ২ ঘণ্টার মধ্যে এত বড় রিপোর্ট পড়ে তা বোঝা এবং নিজের বক্তব্য তুলে ধরা সম্ভব কি?' এই রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য সময় চান তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত ধ্বনিভোটের মাধ্যমে মহুয়া মৈত্রকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আরও পড়ুন: 'ভোটে হারাতে না পেরে সংসদ থেকে খারিজ', মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে তোপ মমতার