সমীরণ পাল, বেতাই: সীমান্তে ফের সোনা পাচারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হল। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তৎপরতায় ব্যর্থ হল চোরাচালানের প্রচেষ্টা। উদ্ধার হল ৫৬ লক্ষ টাকা মূল্যের আটটি সোনার বিস্কুট। সোনার বিস্কুট-সহ এক চোরাচালানকারী ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করেছে BSF. এই চক্রের সঙ্গে আর কে বা কারা যুক্ত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। (India Bangladesh Border)


ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বেতাইয়ে ওই সোনার বিস্কুট আটক করে পাচারের চেষ্টা ভেস্তে দিয়েছে  ৮৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সীমান্ত চৌকি। আটটি সোনার বিস্কুট-সহ গ্রেফতার করা হয়েছে এক ভারতীয়কে। তিনি ওই সোনার বিস্কুট বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচারের চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ। (Gold Biscuits)


BSF সূত্রে খবর, বাজেয়াপ্ত করা ওই সোনার বিস্কুটগুলির ওজন ৯৩৩.৫৪ গ্রাম, ভারতের বাজারে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫৬ লক্ষ ৫৩ হাজার ৭৪২ টাকা। ১০ নভেম্বর ওই বিস্কুটগুলি উদ্ধার হয় বলে জানা গিয়েছে। ধৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এই চোরাচালানে আর কে বা কারা যুক্ত, জানার চেষ্টা করছে শুল্ক দফতর।


আরও পড়ুন: লোক পাঠিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়, বিস্ফোরক দাবি মন্ত্রীর ভুয়ো কোম্পানির ডিরেক্টর পরিচারকের


BSF-এর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ওপি নাকায় নিযুক্ত সীমান্ত ফাঁড়ি বেতাইয়ের জওয়ানরা এই ঘটনার পর্দাফাঁস করেন। বাংলাদেশ থেকে সীমান্তের বেড়া পেরিয়ে ভারতের দিকে উড়ে আসে একটি বান্ডিল। বাংলাদেশের দিক থেকে সেটি ছুড়ে দিয়েই এক ব্যক্তি ছুটে পালিয়ে যান। তাতেই BSF তৎক্ষণাৎ সতর্ক হয়ে যায়। এলাকায় টহল দেওয়া বাকি সীমান্তরক্ষীদের কাছেও পৌঁছে যায় খবর। 


এর পর টহল দিতে গিয়ে ভারতের দিকে অন্য চোরাকারবারির সন্ধান মেলে। তিনি উড়ে আসা ওই বান্ডিলটি তুলতে এসেছিলেন। BSF-কে দেখে ওই ব্যক্তি পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু চারিদিক থেকে তাঁঁকে ঘিরে ফেলে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এর পর BSF-এর হাতে পাকড়াও হন তিনি। তার পর তল্লাশি চালিয়ে আটটি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হয় একটি বোতাম টেপা মোবাইল ফোনও। 


ধৃত পাচারকারীকে গৌতম রাইশ্বর নামে শনাক্ত করা হিয়েছে। তিনি নদিয়া জেলার তেহট্ট থানার অন্তর্গত লালবাজার গ্রামের বাসিন্দা। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের মেহেরপুরের হরিরামপুর গ্রাম থেকে এই সোনার বিস্কুট এসেছে। সেখানকার বাসিন্দা ইমতুল্লা শেখের বাবা সিরাজউল্লা শেখের থেকে নদিয়ার এক চোরা কারবারির হাতে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল বিস্কুটগুলি। তার বিনিময়ে ১০০০ টাকা পাওয়ার কথা ছিল গৌতমের। কিন্তু তার আগে পাকড়াও হলেন তিনি।


এই ঘটনায় BSF-এর প্রশংসা করেছেন দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের ডিআইজি তথা জনসংযোগ আধিকারিক শ্রী এ কে আর্য। তিনি বলেন, "নিরীহ, দরিদ্র মানুষদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে চোরা কারবারিরা। বেছে বেছে দরিদ্র মানুষজনকেই নিশানা করে তারা।"


সীমান্ত এলাকার মানুষের জন্য BSF-এর 'সীমা সাথী' হেল্পলাইন নম্বর ১৪৪১৯ প্রকাশ করা হয়েছে। চোরাচালানকারীদের সন্ধান পেলে ওই নম্বরে প্রকাশ করে জানাতে আবেদন করেন ডিআইজি-ও। এর পাশাপাশি, দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তে আরও একটি হেল্পলাইন নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে-৯৯০৩৪৭২২২৭, যাতে হোয়াটসঅ্যাপ মারফতও যোগাযোগ করা যাবে। যে বা যাঁরা খবর দেবেন, তাঁদের পরিচয় গোপন রাখার পাশাপাশি, পুরস্কৃতও করা হবে বলে জানা গিয়েছে।