কলকাতা: চলন-বলনে কেতাদুরস্ত। আছে ইন্টিরিয়র ডেকরেশনের ব্যবসা। সেই নুর আমিনকেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে থেকে অস্ত্র-সহ গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সূত্রের খবর, ধৃত নুর আমিন আদতে পশ্চিম মেদিনীপুরের লোক। ডেবরা এবং মেদিনীপুর শহর, এই দুই জায়গাতেই যাতায়াত ছিল নুর আমিনের।
কী উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে?
২১ জুলাইয়ের সমাবেশ ঘিরে তৃণমূল কর্মীদের উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা। তারই মধ্যে এক সন্দেহভাজনের গ্রেফতারি ঘিরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির অদূরে হলুস্থূল। ধৃত নুর আমিন সম্পর্কে তত্ত্ব-তালাশ করে দেখা গেছে, গত কয়েকবছর ধরে ওই ব্যক্তির ঠিকানা কলকাতার আনন্দপুর থানার মার্টিনপাড়া। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,বছর দুয়েক আগে মার্টিনপাড়ারই ১৪১-এর বি - ঠিকানায় একটি বহুতলে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন নুর। এদিন বাজেয়াপ্ত করা কালো গাড়ির রেজিস্ট্রেশনও সেই ঠিকানায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর তিনেক আগে মার্টিনপাড়ায় আরেকটি দোকানঘর কেনেন নুর। সেখানেই খোলেন ইন্টিরিয়র ডেকরেশনের ব্যবসা। নাম - নুর ইন্টিরিয়র প্রাইভেট লিমিটেড।
মার্টিনপাড়াতেই নুর আমিনের প্রতিবেশী সঞ্জীব দাস। আরও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নুর আমিন আদতে পশ্চিম মেদিনীপুরের লোক। বাড়ি ডেবরার চণ্ডীপুরে। এই একতলা বাড়িতেই থাকেন নুরের মা-বাবা-সহ আত্মীয়-স্বজনরা। যদিও, ছেলের গ্রেফতারি নিয়ে তাঁরা কেউ মুখ খুলতে চাননি। মেদিনীপুর শহরের অলিগঞ্জের কসাইপাড়ায় নুর আমিনের শ্বশুরবাড়ি। এখানেই দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন নুরের স্ত্রী। নুর আমিনের শাশুড়ি সুলতানা পারভিন বলেন, “সপ্তাহে একদিন করে আসে। তারপর সোমবার চলে যায়। কলকাতাতে ইন্টিরিয়রের কাজ করে। আমার জামাই খুব ভাল। পাড়ার সবাইকে জেনে নাও। এরকম করতেই পারে না। কেউ ফাঁসিয়েছে।’’
গত বছর ২ জুলাই রাতে, মুখ্যমন্ত্রীর দাদার ঘরের পাশ দিয়ে পাঁচিল ও গার্ডরেল টপকে বাড়ি চত্বরে ঢুকে পড়েছিলেন হাফিজুল মোল্লা নামে হাসনাবাদের এক ব্যক্তি।মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কনফারেন্স রুমের পিছনে প্রায় ৭ ঘণ্টা ঘাপটি মেরে ছিলেন হাফিজুল।পরদিন সকালে ওই ব্যক্তিকে দেখে পুলিশ ডাকেন এক সাফাই কর্মী।পালাবার আগেই হাফিজুলকে ধরে ফেলে পুলিশ।পরে আদালতে হাফিজুল সম্পর্কে SIT দাবি করে, অন্তত ৭ থেকে ৮ বার, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির এলাকায় গিয়েছিল হাফিজুল। ছবি তোলার পাশাপাশি দোল উৎসব থেকে রথের অনুষ্ঠানেও অংশ নিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর জেড প্লাস ক্যাটিগরির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন সেদিনও উঠেছিল। আর একবছর পরে ২১ জুলাইয়ের দিন ফের সেই একই প্রশ্ন উঠল। কী উদ্দেশ্যে ওই ব্যক্তি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে পুলিশের স্টিকার লাগানো গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন? জেরা করে তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন
https://t.me/abpanandaofficial