আবির দত্ত, কলকাতা: ফ্ল্যাটের জানলা খুললেই অনাচারের ছবি! কখনও জানালার কাচ ভাঙছে ক্রিকেট বলে! কখনও উড়ে আসছে মদের বোতল! দিন-রাত দৌরাত্ম্য! যাদবপুরের (JU Hostel) মেন হস্টেলের আবাসিকদের একাংশ সম্পর্কে গুরুতর সব অভিযোগ তুলছেন পোদ্দারনগরের বাসিন্দারা।


অতিষ্ট প্রতিবেশীরা: বিচ্ছিন্ন কোনও দ্বীপ নয় যাদবপুরের মেন হস্টেল। একপাশে যাদবপুর থানা। (JU Police station) হস্টেলের ঠিক পিছনেই যাদবপুরের পোদ্দারনগর। যাদবপুরের মেন হস্টেলে (Jadavpur univeristy) যে কী কী ঘটে, তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার সাক্ষী এখানকার একাধিক বাসিন্দা। ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “সকালে বল লেগে জানালা কাচ ভাঙে, বিকালে বোতল! পুলিশকে বলেও কোনও লাভ হয়নি।’’                                

৯ অগাস্ট রাতে যাদবপুরের মেন হস্টেলে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় উঠেছে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ। মেন হস্টেলে যে এমন কাণ্ড-কারখানা ঘটে, তা পোদ্দারনগরের বাসিন্দাদেরও নজর এড়ায়নি। শুধু কী তাই, মেন হস্টেলের ঠিক সোজাসুজি, পোদ্দারনগরের একটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা তো আরও ভয়ান। এক  বাসিন্দা বলেন, “৩টে পরপর জানালা, এখানে দেখেছি, ওই চলে টিভি চলে, জামাকাপড় খুলে ২ হাত বেঁধে, প্রচণ্ড অত্যাচার করে। সারারাত চলে।’’

১৪ বছর আগেও, ২০০৯ সালে পোদ্দার নগরের বাসিন্দাদের সঙ্গে তুমুল গন্ডগোলে জড়িয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের হস্টেলের আবাসিক ছাত্ররা। পোদ্দার নগরের বাসিন্দাদের অভিযোগ ছিল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের হস্টেলের আবাসিকদের একাংশ কখনও পাড়ায় মদের বোতল ছুড়ে মারতেন কখনও স্থানীয় মহিলাদের শ্লীলতাহানি করতেন। এনিয়ে ফের একদিন বলতে গেলেই ছাত্ররা মারমুখী হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ। ক্য়াম্পাসের কাছে রাস্তার ওপরই স্থানীয়দের সঙ্গে যাদবপুরের ছাত্রদের সংঘর্ষ বেধে যায়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছোয় যে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ছাত্ররা অবশ্য় অভিযোগ করেছিলেন, বিনা প্ররোচনায় তাদের মারধর করা হয়।


সেদিনের সেই ঘটনার পরও কি যাদবপুরের মেন হস্টেলের আবাসিকদের একাংশের দৌরাত্ম্য কমেছে? পোদ্দারনগরের এক বাসিন্দা বলেন, “আমাদের বাড়ির মেয়েরা ছাদে কাপড়-জামা মেলতে পারে না, কাচ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, চোখে আলো ফেলে। ছবি তোলে। গান গায়। আমাদের দেখে অশ্লীল ভাষায় কবিতা চলে। ছাদে ওঠাই বন্ধ। অনেক বার বলেছি। বহু বলেছি। কেউ শোনে না। বলে যা করার করে ফেল! হুমকি দেয়!’’


আরও পড়ুন: Jadavpur University: ক্যাম্পাসে পা রাখার আগেই আতঙ্ক, ছাত্র মৃত্য়ুতে শঙ্কায় অন্য পড়ুয়ারাও