পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) পড়ুয়ামৃত্যুর পর ঘুম ভেঙেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। গতকাল রাতে হস্টেল পরিদর্শন করে অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটি (Anti Ragging Committee) ও আধিকারিকরা। A-1 এবং A-2 ব্লকে গিয়ে পড়ুয়াদের কী অসুবিধা জানতে চাওয়া হয়। বিশেষভাবে খোঁজ নেওয়া হয়, হস্টেলে আর কোনও প্রাক্তনী আছেন কি না, সে সম্পর্কে। 


হস্টেল সুপাররা জানান, অনেক বোর্ডারই চলে গিয়েছেন আতঙ্কে। যাঁরা হস্টেল ছেড়েছেন, তাঁদের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাত ৮টার পর হস্টেল থেকে বেরোলে রেজিস্টারে নাম লিখে রাখার নির্দেশ দিয়েছে অ্যান্টি-র‍্যাগিং কমিটি। বাইরে থেকে হস্টেলে ঢোকার সময়ও রেজিস্টারে লিখতে হবে নাম। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা মহলের একাংশ মনে করছে, পড়ুয়া মৃত্যুর আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই তৎপরতা দেখালে বাঁচত অকালে ঝরে যাওয়া প্রাণ। 


গতকালও দেখা গেছে, বদলায়নি ছবিটা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল সংলগ্ন পুকুরে পাওয়া যায় গুচ্ছ গুচ্ছ মদের বোতল। প্রশ্ন উঠছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই নৈরাজ্য়ের ছবি কি এতদিন দেখেও দেখেনি কর্তৃপক্ষ ? যাদবপুর নাকি 'মাদক পুর'? এখনও কি অবাধে বসছে নেশার আসর ? শুক্রবারও সেই ছবি ধরা পড়ে এবিপি আনন্দর ক্যামেরায়।


যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তোলপাড় হচ্ছে। সবাই চাইছে সুস্থ ক্যাম্পাস ! ভিতরে ভয়ঙ্কর সেই ঘটনার পুনর্নির্মাণ করছে পুলিশ। ঠিক তখনই দেখা গেল এই ছবি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল। এই হস্টেলের তিন তলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় ওই পড়ুয়ার। সেই হস্টেলের কম্পাউন্ডের ভিতরে থাকা পুকুরের যততত্র-সর্বত্র এখনও পড়ে রয়েছে মদের বোতল। 


যা দেখে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, এটা বিশ্ববিদ্য়ালয় না নেশার আখড়া ? শিক্ষার পীঠস্থানে নেশার উপকরণের এত রমরমা কী করে ? নেশা কি শুধু এইটুকুতেই সীমাবদ্ধ ছিল ? নাকি যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয় ক্য়াম্পাসে কি অন্য় নেশাও চলত ? 


শুধু সূর্য অস্ত যেতে দেরি ! অভিযোগ, অন্ধকার নামলেই রঙিন হয়ে ওঠে যাদবপুরের ক্যাম্পাস। বসে নেশার আসর। মদ-গাঁজা, কী থাকে না, সেখানে! অভিযোগ, রাত বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে নেশার ঘোর ! 


একটা পরিবারের স্বপ্নভঙ্গের পরও, যে ভয়ঙ্কর এই ছবিটা বদলায়নি, তা এদিনের এই ছবি থেকেই স্পষ্ট।


আরও পড়ুন ; 'হস্টেল সংলগ্ন পুকুরে পাওয়া গেল গুচ্ছ গুচ্ছ মদের বোতল' এখনও কি অবাধে বসছে নেশার আসর?