পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) র‍্যাগিং (Ragging) নিয়ে বিস্ফোরক হস্টেলের সুপার। তিনি বলেন, 'মেন হস্টেলে বসত নেশার আসর। হস্টেলের ঘরে-ছাদে র‍্যাগিং চলত, প্রাক্তনীদের প্রভাব ছিল। হস্টেলে নজরদারি করতে গেলে বাধা দেওয়া হত। সব জেনেও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ', অভিযোগ হস্টেলের সুপারের। (Jadavpur University Student Death) 


ঠিক কী জানিয়েছেন তিনি? 


হস্টেল সুপার এদিন এবিপি আনন্দকে জানান, আমি কোনও নিরাপত্তারক্ষী বা কাউকে কোনও নির্দেশ দেয়নি। এই ঘটনা যখন ঘটেছে, তখন আমি ঘরে। ১২.০৭ নাগাদ এ খবর পেয়েছি আমি। আমাদের আরেক সুপার গৌতম মুখোপাধ্যায় আমাকে ফোন করে জানান যে আপনাদের কোনও একটা ব্লকে বারান্দা থেকে এক ছাত্র পড়ে গিয়েছেন। আমি যখন নিচে নামি ততক্ষণে ওই পড়ুয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 


এরপরই তিনি বলেন, 'হস্টেলে ছাত্ররা থাকত, মদ ও নেশার দ্রব্য চলতই ওখানে। আমি হয়তো রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি সেই সময় দেখলাম পুকুর পাড়ে বসে খাচ্ছে। আমি মাথা নিচু করে চলে যেতাম। সকলেই প্রাপ্তবয়স্ক। গালিগালাজ করলে খারাপ লাগত। বেশিরভাগই ঘরে বা ছাদে খেত।  (Ragging)


র‍্যাগিং নিয়ে ওই হস্টেল সুপারের মত, 'আমার ব্লকে জামাকাপড় খুলে র‍্যাগিং হয়েছে এ তথ্য পাইনি। তবে ঘরে নিয়ে ইন্ট্রোডিউজ করার চল ছিল। প্রথম বর্ষের ছাত্ররা এলে যেতাম। টহল দিয়ে চলে এলে ঘরে বাইরে এসে ছাত্ররা গালিগালাজ দিয়ে যেত। দিনের বেলায় যেতাম। রাতে সবসময় যেতাম না। নতুন ছেলেরা আসলে যেতাম। আমার ফোন নম্বর দিয়ে আসতাম। আমিও তাঁদের ফোন নম্বর কালেকশন করে রাখতাম। তবে সিনিয়রদের প্রভাব মারাত্মক ছিল। কর্তৃপক্ষ সবই জানে, জানে না এমন কিছু নয়। কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মুখে অনেকবার বলেছি। কোনও ছেলে রিপোর্ট করলে নিশ্চয়ই কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিত। আমরা ২ জন সুপার ৬০০ ছাত্রকে সামল্যাব কী করে?' 


আরও পড়ুন, ভয়াবহ রাতে বিবস্ত্র করে ব়্যাগিং ছাত্রকে, আবার প্ল্যান করে তাদেরই ফোন ডিন অফ স্টুডেন্টসকে !


অন্যদিকে, যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় এই নিয়ে একে একে মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। প্রথমে ৩। আর এবার আরও ৬। ৬ জনেরই ২৮ তারিখ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন আলিপুর আদালতের বিচারক। ধৃত ৯ জনের মধ্য়ে ৪ প্রাক্তনী ও ৫ জন পড়ুয়া। কিন্তু এদের সবাই থাকতেন হস্টেলে। ধৃত ৬ জনের মধ্যে যে ৩ জন প্রাক্তনীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরা হলেন - সপ্তক কামিল্যা। অসিত সর্দার। সুমন নস্কর। মহম্মদ আরিফ। মহম্মদ আসিফ আফজল আনসারি এবং অঙ্কন সরকার। আদালতে সরকারি আইনজীবী জানান, ঘটনার পরই কলকাতা ছেড়ে বাড়ি চলে যান অসিত, সপ্তক ও সুমন।বাকিরা ছিলেন হস্টেলে। ধৃতদের কাছ থেকে ৫টি মোবাইল ফোন ও সপ্তকের ল্যাপটপ সিজ করা হয়েছে। ঘটনার সময় এঁদের উপস্থিত থাকার প্রমাণ মিলেছে।