কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুতে তোলপাড় গোটা রাজ্যে। বিতর্কে অন্য মাত্রা যোগ করেছে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের বিতর্কিত মন্তব্য। পাশাপাশি অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে গণিতের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউকে (Buddhadeb Sau) নিয়োগ নিয়েও তরজা চরমে, যাঁর আঁচ পড়ছে বঙ্গ রাজনীতিতেও।


রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose) বিজেপি-র অধ্যাপক সংগঠনের নেতা, বুদ্ধদেবকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত করেছেন। সেই নিয়ে ইতি মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্য়াপক, শিক্ষাকর্মী এবং পড়ুয়াদের একাংশ অসন্তোষ জানাতে শুরু করেছেন। এবার বুদ্ধদেবের ছবি বসানো একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পোস্ট ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে ওই পোস্টটি, যেখানে তৃণমূলকে কটাক্ষ করা হয়েছে।


ওই ফেসবুক পোস্টটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে করা। প্রোফাইল পিকচারে রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেবের ছবি। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে করা এই ফেসবুক পোস্টই এখন হাতিয়ার তৃণমূলের। দলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন (Kunal Ghosh)। 


আরও পড়ুন: Supreme Court:আচার্য ও রাজ্য সরকার মিলে সমস্যার সমাধান করতে পারলেন না কেন? স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের


বুদ্ধদেবের ওই পোস্ট নিয়ে কুণাল বলেন, "আমাদের একটা অভিযোগ আছে। রাজ্যপাল একজন উপাচার্য নিয়োগ করেছেন, নাম বুদ্ধদেব সাউ। তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এই ছবি শেয়ার করেছেন, যেখানে একটি শিশু রয়েছে। তাকে দিয়ে বলানো হয়েছে, 'মেয়েদের চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি...সাহস থাকলে আই লভ ইউ বল'। ইনি যদি সেই উপাচার্য হন, তিনি কোন ব়্য়াগিং থামা যাচ্ছে। ওই বুদ্ধদেব উপাচার্য বুদ্ধদেব একই মানুষ কিনা, আমি তদন্ত দাবি করছি। এই সংস্কৃতির যদি কেউ উপাচার্য হন, তাহলে কী করতে যাচ্ছেন উনি! আর যদি এক ব্যক্তি না হন দু'জন, তাহলে ওঁর ছবি ব্যবহার করে কারা এমন করেছেন, সেটাও দেখা উচিত।"

পুরনো ওই পোস্টকে কেন্দ্র করে বর্তমান অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে নিশানা তৃণমূলের। শুধু তাই নয়, বর্তমান উপাচার্যের বিরুদ্ধে অতীতে সমকামিতা বিরোধী পোস্ট করার অভিযোগও সামনে এসেছে। এমন মানুষকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের পিছনে শিক্ষার গৈরিকীকরণের উদ্দেশ্য লুকিয়ে  রয়েছে, রাজ্যপাল সেই কাজ করছেন বলে অভিযোগ কুণালের। 


কুণাল যে পোস্ট দেখিয়েছেন, সেটি ২০১৭ সালের। বর্তমানে ওই প্রোফাইলটি লক করা রয়েছে। ফলে, এই পোস্টটি আদৌ রয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট হয়নি। ওই অ্যাকাউন্ট তাঁর কিনা, বিতর্কের মধ্যেও এখনও সেই নিয়ে মুখ খোলেননি বুদ্ধদেবও। তবে তাঁর নিয়োগে প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় সদস্য সুজন চক্রবর্তীও। তাঁর বক্তব্য, "রাজ্যপাল মাঝরাতে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। যাঁকে নিয়োগ করেছেন, ১০ বছরের অভিজ্ঞতার যোগ্যতাই নেই তাঁর। কোনও বিভাগে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতাও নেই।" বুদ্ধদেবকে নিয়োগের প্রশ্নে তৃণমূল এবং বিজেপি-র দখলদারির রাজনীতি রয়েছে বলে অভিযোগ সুজনের।