অরিত্রিক ভট্টাচার্য, সমীরণ পাল এবং শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) পড়ুয়া স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় আচার্য ও রাজ্যপালের (Governor) রিপোর্ট চাইল রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন (State Child Rights Protection Commission)। এই ঘটনায় কলকাতার (Kolkata) পুলিশ কমিশনারকেও (Police Commissioner) চিঠি দিয়েছে তারা। এদিকে, স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়ে পথে নেমেছে বিভিন্ন দলের ছাত্র ও যুব সংগঠন। 


সন্তান বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়বে, ভাল কেরিয়ার গড়বে, তারপর সংসারের হাল ধরবে। স্বপ্নদীপকে নিয়ে এই স্বপ্নই তো বুনেছিলেন তাঁরা। কিন্তু, ১৮ বছর ধরে লালিত-পালিত সেই স্বপ্নই হঠাৎ শেষ। কিন্তু এত বড় বিপর্যয়ের দায় কার? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কি তার ভূমিকা এড়াতে পারে?


এই সমস্ত প্রশ্ন ঘিরেই সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য-রাজনীতিও। শনিবার স্বপ্নদীপের মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়া দাবিতে যাদবপুর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান ছাত্র পরিষদ কর্মীরা। এরপর মিছিল করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেটের সামনে গিয়ে পথ সভা করেন ছাত্র পরিষদের নেতা ও কর্মীরা।  


বিকেলে যাদবপুরে মিছিল করে বিজেপির দক্ষিণ কলকাতা সাংগঠনিক জেলা যুব মোর্চা। ক্যাম্পাস ছেড়ে মিছিল পৌঁছয় যাদবপুর থানায়। ডেপুটেশন দেওয়া হয়। এরপর থানার সামনে পথ অবরোধ চলে প্রায় আধঘণ্টা ধরে। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার বলেন, 'রাজ্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ধরনের ঘৃণ্য ঘটনা ঘটলে, তা বন্ধের দায় নিতে হবে রাজ্য সরকারকেই। উপাচার্য থাকাকালীনও সমস্যা ছিল। আচার্যকে জড়িয়ে বিষয়টা রাজনৈতিক করে লাভ হবে না।' 


আরও পড়ুন, যাদবপুর ক্যাম্পাসে সিংহভাগ জায়গাতেই নেই CCTV! UGC-র নির্দেশিকার পরও কেন এই অবস্থা?


রাজ্য সাধারণ সম্পাদক, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ' পুলিশ-প্রশাসন কড়া ভাবে দেখছেন। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী তিনি গোটা ঘটনায় মর্মাহত এবং অত্যন্ত ক্রুদ্ধ, কেন এই ঘটনা ঘটবে। এই মৃত্যু এভাবে কেন হবে। যারা এই মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে জড়িত, যারা এই মৃত্যুকে কভারআপ করার চেষ্টা করেছে, বা কাউকে কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করছে, তাদের সবাইকে শাস্তি দিতে হবে।' 


এদিকে, স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় আচার্য ও রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। চিঠি পৌঁছেছে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের কাছেও। বেআইনিভাবে যাদবপুরের হস্টেলে কতজন রয়েছেন, তা জানতে চাওয়া হয়েছে লালবাজারের কাছে। হস্টেলের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ জমা দিতে বলা হয়েছে সেই চিঠিতে।